সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

স্বামীকে হত্যার এক বছর পর পরকীয়া প্রেমিক দাদাসহ আটক হলেন মিতু

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

বরগুনায় স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা মিতু (২৪) ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়া (২০)। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান, বরগুনা থানার ওসি তারিকুল ইসলাম ও ডিবির ওসি আবুল বাশারের নেতৃত্বে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বড়ইতলা গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাসির উদ্দিন হাওলাদারকে (৪০) খুনের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নাসিরের বাবার নাম গয়জদ্দিন হাওলাদার।

নিহতের ভাই আবদুল জলিল হাওলাদার জানিয়েছেন, তার ছোট ভাই নাসির উদ্দিন হাওলাদারের সঙ্গে দশ বছর আগে বরগুনা পৌরসভার শহীদ স্মৃতি সড়কের দলিল লেখক মাহতাব হোসেন মৃধার মেয়ে ফাতেমা মিতুর বিয়ে হয়। তাদের নুসরাত নামে আট বছরের একটি মেয়ে ও নাঈম নামে পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। দুই বছর আগে ঢলুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের আবদুল বারেকের কলেজ পড়ুয়া ছেলে রাজুর সঙ্গে মিতুর পরকীয়া প্রেম শুরু হয়। মিতু এবং রাজু সম্পর্কে দাদী-নাতি। কেননা রাজু হচ্ছে নিহত নাসিরের চাচাতো ভাইয়ের নাতি। পরকীয়া প্রেম থেকে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নাসির টের পেলে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। গত বছরের ঈদের আগের রাতে (২৩মে, ২০২০) নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে কম্বল চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত কাঁঠাল খেয়ে নাসির স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।

ফাতেমা মিতু তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, তাদের পরকীয়া সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিতে দুইজনে মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। মিতু আরও জানান, ২৩ মে বিকেলে ঘুমর ওষুধ কিনে রাজু তাকে দিয়ে আসেন। সন্ধ্যার পরে নাসির মজা করে কাঁঠাল খায়। ঘুমের আগে কৌশলে নাসিরকে অতিরিক্ত পরিমান ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। রাত ১১ টার পরে রাজুকে মোবাইলে জানানো হয়, নাসির ঘুমিয়ে পড়েছে তুমি চলে আসো। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মিতু ও রাজু মিলে নাসিরকে কম্বল চাপা দিয়ে মেরে ফেলে। মিতু স্বীকার করেছে, তার ইচ্ছে ছিলো রাজুকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করবে।

রাজু জানিয়েছেন, সম্পর্কে দাদী হলেও মিতুকে সে ভাবী বলে ডাকতো। চাকরির জন্য নাসির স্কুলে গেলেই তারা দাদী-নাতি অনৈতিক সম্পর্কে মিলিতো হতো। নাসির তাদের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ঈদের আগের রাতকে হত্যাকাণ্ডের জন্য বেছে নেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, তাদের ধারণা ছিলো ছিলো ঈদের দিন সবাই ব্যস্ত থাকবে। কেউ পরিকল্পিত হত্যার বিষয়টি বুঝতে পারবে না। তবে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি তাদের জন্য কাল হয়েছে। রাজু আরও জানায়, সপ্তাহ খানেক আগে তার মোবাইল ফোনটি হারিয়ে ফেলে।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাজুর হারিয়ে ফেলা মোবাইল ফোনটি ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকখালী বাজারের দোকানদার আরেক রাজু পেয়েছে। ওই মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানা যায়। তাদের কল রেকর্ডসহ মোবাইল ফোনটি ওসির হাতে চলে আসলে বুধবার রাতেই মিতু ও রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরও জানিয়েছেন, নাসিরের বড় ভাই আবদুল জলিল হাওলাদার বাদী হয়ে মিতু ও রাজুকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

বরগুনার পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক জানিয়েছেন, মিতু ও রাজু দুজনই তাদের কাছে নাসিরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আরও জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তারপরেই আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হবে।

 

CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।