শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

লকডাউনে বিদেশে চিকিৎসা বন্ধ, কঠিন বাস্তবতার মুখে অভিজাতরা

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২১

অন্য সময়ে ছোটবড় যেকোনো অসুখ হলেই বিদেশে ছুটে যান অভিজাত শ্রেণীর লোকেরা। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি বদলে দিয়েছে সব। সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ রেখেছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ। ফলে চিকিৎসার জন্য যারা পুরোপুরি বিদেশনির্ভর ছিলেন, আজ বাধ্য হয়েই স্থানীয় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের। নিজ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি না করে যে অভিজাতরা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতেন, করোনা মহামারি তাদের দাঁড় করিয়েছে এক কঠিন বাস্তবতার সামনে।

এই দৃশ্য হয়তো অনেক দেশেই দেখা যাবে, তবে সেটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে জিম্বাবুয়ের ক্ষেত্রে। গত ছয় মাসে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির চার মন্ত্রী।বৈশ্বিক মহামারিতে লকডাউনের মধ্যে গত জুলাইয়ে মারা যান জিম্বাবুয়ের কৃষিমন্ত্রী পেরান্স শিরি। এরপর প্রাণ হারিয়েছেন আরও কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। তবে গত কয়েক সপ্তাহে যেন হঠাৎ করেই মড়ক শুরু হয়েছে অভিজাতদের মধ্যে।

সম্প্রতি মারা গেছেন দেশটির পরিবহনমন্ত্রী জোয়েল বিজি মাটিজা এবং ম্যানিক্যাল্যান্ডের প্রাদেশিক বিষয় ও বিকেন্দ্রীকরণ মন্ত্রী এলেন গোয়ারাজিম্বা।সবশেষ এ তালিকায় যোগ হয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী সিবুবিসো মোয়ো। ৬১ বছর বয়সী এ নেতা ২০১৭ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দিয়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২০ জানুয়ারি হারারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি।

শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাপূর্ব সময়ে এধরনের ক্ষমতাধর নেতারা সাধারণত চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা বা চীনের মতো দেশগুলোতে চলে যেতেন। কিন্তু কড়া বিধিনিষেধের কারণে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বন্ধ থাকায় বর্তমানে নিজ দেশের ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের।বিশ্লেষক ভিভিড গেদে বলেন, জিম্বাবুয়ের রাজনৈতিক অভিজাতরা স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবার মুখোমুখি হতে বাধ্য হয়েছেন, যে ব্যবস্থা বহু বছর আগেই ভেঙে পড়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট মুগাবে তার কয়েক দশকের শাসনামলে চিকিৎসার জন্য নিয়মিত বিদেশে যেতেন, বিশেষ করে সিঙ্গাপুরে। ২০১৯ সালে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।মুগাবে একা নন, একই কাজ করছেন আরও অনেকেই। ২০১৭ সালে জিম্বাবুয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও তৎকালীন ভাইস-প্রেসিডেন্ট এমারসন মানানগাগওয়া একটি সমাবেশের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লে খাদ্যে বিষক্রিয়া সন্দেহে চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত বিমানে করে দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট অফিসের মুখপাত্র নিশ্চিত করেছিলেন, বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট কনস্টান্টিনো চিওয়েঙ্গা চিকিৎসার জন্য চীনে গেছেন।গত আগস্টে জিম্বাবুয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া চিওয়েঙ্গা সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের সরকার জিম্বাবুইয়ানদের চিকিৎসার জন্য বিদেশভ্রমণ নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে। তার মতে, এটি দেশের অর্থভাণ্ডার শুষে নিচ্ছে।

চিওয়েঙ্গার কথায়, মন্ত্রী মাত্র ২০ জন হতে পারে, কিন্তু যে বাইরে যাচ্ছে সে আপনি, আমি, আমরা সবাই। ওইগুলোর বিল অনেক বেশি এবং ওটাই আমি বন্ধ করতে চাই।সম্প্রতি জিম্বাবুয়েতে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। গত ১ জানুয়ারি যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৮৪ জন ও মৃত ৩৬৯ জন, ৩০ জানুয়ারি তা একলাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৩৩ হাজার ২৭৩ জন এবং ১ হাজার ১৯৩ জন।

জিম্বাবুয়েতে করোনায় মারা যাওয়া অভিজাতদের মধ্যে আরও রয়েছেন সাবেক উপ-অর্থমন্ত্রী মর্টন মালিয়াঙ্গা, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আয়েনেস চিগওয়েডিয়ার, সাবেক কারা কমিশনার প্যারাজাই জিমোন্ডি প্রমুখ।হারারের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ম্যাক্সওয়েল সউঙ্গেমে বলেন, কোভিড-১৯ দেখিয়ে দিয়েছে, এটি একটি সমতাকারী। এটি প্রমাণ করে দিয়েছে, আমাদের সম্পদ ও লোভ নয়, মানুষ হিসেবে সংহতি দরকার। করোনা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।