চাটমোহর ও ফরিদপুর থানার কিছু অংশ নিয়ে ১৯৮১ সালে ভাঙ্গুড়া উপজেলা গঠিত হয়। এর আগে ভাঙ্গুড়া ফরিদপুর থানার একটি ইউনিয়ন ছিল। ভাঙ্গুড়া থানা হয় ১৯৮২ সালে। ভাঙ্গুড়া গ্রামের নামানুসারে ভাঙ্গুড়া উপজেলার নাম করণ করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে একটি দুইতলা ছাঁদ বিশিষ্ট ও একটি একতলা বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে এই থানার কার্যক্রম শুরু হয়, যার অবস্হা ভবনের কলাম এবং ভিমগুলো ভেঙে রড বের হয়ে গেছে, ছাদের ঢালাই ভেঙে রড ঝুলে পড়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে রডগুলোর টেম্পার। রুমের প্লাস্টার খসে ইট বের হয়ে গেছে, মাঝে মাঝে ছাদের প্লাস্টার এবং ঢালাই ভেঙে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে চোখে পড়ছে বড় বড় ফাটল। এমন জরাজীর্ণ ভবনে চলছে ভাঙ্গুড়া পুলিশের থানার কার্যক্রম।
জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সার্বক্ষণিকভাবে যে বাহিনী দায়িত্ব পালন করে থাকে, জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও আতংকের মধ্যে থানা ভবনে কাজ করছে সেই পুলিশ বাহীনি। ভূমিকম্প কিংবা প্রাকৃতিক দূর্যোগে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে এ থানায়। ভাঙ্গুড়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), তদন্ত (ওসি) উপ-পরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ থানা ভবনে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ৩৫থেকে ৪০ জন পুলিশ সদস্য ছাঁদ বিশিষ্ট এক তলা ভবনে পুলিশ ব্যারাকে রাত্রিযাপন করছেন। বাকিরা সবাই থাকে ভাড়া বাসায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৬০ দশকে একটি দ্বিতল ও পাশে একটি এক তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। থানা ভবনটি এখন ঝঁকিপূর্ণ। ভবনের ছাদের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ছে কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষ, অস্ত্রাগার ও ব্যারাকে। ঝরঝর করে বালু পড়ে মাথার উপর। দিন-রাত জনগণের নিরাপত্তা দিয়ে একটু শান্তিতেও ব্যারাকে ঘুমাতে পারছেন না তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, থানা ভবনের সামনের অংশ দেখলে মনে হবে নতুন ভবন। কিন্তু এর বাস্তব অবস্থা ঠিক ‘বাহিরে ফিটফাট আর ভেতরে সদরঘাট’। দ্বিতলা বিশিষ্ট এ থানা ভবনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষেই বড় বড় ফাটল। এছাড়া সার্ভিস ডেস্ক, অস্ত্রাগার, ওয়ারল্যাস অপারেটর কক্ষ, ব্যারাক ও অফিসাররা যেসব কক্ষে বসে কাজ করছেন সেখানের ছাদের ঢালাই ভেঙে রড ঝুলে পড়েছে।
থানা মসজিদের ইমাম জানান, ১৯৮৩ সালে একটি দ্বিতল ও একটি এক তলা ভবন দিয়ে ভাঙ্গুড়া থানার যাত্রা শুরু হয়। আমি এই থানায় অনেক দিন যাবৎ ইমামতি করছি। বর্তমানে খুব বিপদের মধ্যে আছি কখন কি হয়। ভাঙ্গুড়া থানার (এস আই) মোঃ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে থানায় কর্মরত অবস্থায় আমার কাছেই ছাদ ধসে ইট সুরকি খুলে পড়ে। সামান্যর জন্য মাথায় পরেনি। মাথায় পড়লে হয়তো বিপদ ঘটে যেতো।
থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মোঃ মোদাচ্ছের আলী সাপ্তাহিক চলনবিলের আলোকে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা এখানে কাজ করছি। জানিনা কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। জানিনা কবে এই ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবো।
পুলিশের দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন সাপ্তাহিক চলনবিলের আলোকে বলেন, ব্যবহারের অনুপোযোগী ভবনে দিনের পর দিন চলছে থানার কার্যক্রম ও পুলিশের বসবাস। ভবনের অবস্থা এতোই নাজুক যে কোনো সময় ভবন ভেঙে জীবনহানি ঘটতে পারে। আমি গত জুলাই মাসে এই থানাতে যোগদান করি এসে জানতে পারলাম যে গত ডিসেম্বর মাসে আমাদের নতুন ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার কথা কিন্তু এখন পযর্ন্ত ভবনের কাজই শেষ হলো না এক সপ্তাহ শ্রমিক কাজ করে দুই সপ্তাহ কাজ বন্ধ থাকে এভাবে কত দিন আমার থানার পুলিশ বিপদে থাকবে।
CBALO/আপন ইসলাম