শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পথশিশুদের সুযোগ করে দিই

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২১
শিশু আর পথশিশু দুটি শব্দ আলাদা মনে হলেও শিশু আর পথশিশু কিন্তু একই। শিশু আর পথশিশুর মধ্য কোন ভেদাভেদ আছে বলে আমি মনে করি না। যদিও তারা রাস্তায় জীবন-যাপন করার কারণে পরিচিত হয় পথশিশু হিসেবে ।আসলে মানুষের মানবতা এবং মনুষ্যত্ব দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। যার ফলে আমাদের দেশে পথশিশুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আসলে এর মূলে রয়েছে অজ্ঞতা, দারিদ্রতা, শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব। একশ্রেণির অশিক্ষিত ও দরিদ্র মানুষ অপরিকল্পিতভাবে সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকে এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পর তাদেরকে পরিত্যাগ করে। এভাবেই বাড়তে থাকে অবহেলিত পথশিশুর সংখ্যা। এসব পিতামাতা সন্তানদের মারধর করে রোজগার করার জন্য। তখন থেকেই শুরু হয় তাদের অবহেলিত কষ্টের জীবন। পথশিশুদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এই কচি, কোমল মুখগুলো পরিচিত হয় নতুন অনেক অসহনীয় অভিজ্ঞতার সঙ্গে। পথশিশুদের মধ্যে কঠিন বাস্তবতা এমন ভাবে জায়গা করে নেয় একসময় ওরাই হয়ে ওঠে নেশাখোর,ছিনতাইকারী ইত্যাদি। আজ যে ছোট ছোট বাচ্চা রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে, ফুল বিক্রি করে কিংবা কিছু খাবে বলে টাকা চায় তাদের ভবিষ্যত কী হবে? যে বয়সে তাদের হাতে থাকা উচিৎ বই-খাতা সে বয়সে তাদের হাতে থাকে প্লাস্টিকের বস্তা। রাস্তায় রাস্তায় তারা প্লাস্টিক খুঁজে। কি নির্মম বেদনাময় দৃশ্য!
এসবই তারা করে শুধুমাত্র দু’বেলা দুমুঠো ডাল ভাত খাওয়ার জন্য নয়। ছাদহীন খোলা আকাশের নীচে রেললাইন ও রাস্তার পাশে আনন্দে কাটানোর জন্যও নয়। ইচ্ছে করে বা কোনো স্বপ্ন পূরণের জন্যও নয়। বরং তারা এই মানবেতর জীবন যাপন করে বিভিন্ন  অপরাধীচক্রের চাপের কারণে। অথবা রাজনৈতিক কোনো দলের প্রয়োজনে। অথচ পথশিশুরাও তো মানুষ, ওদেরও তো জীবন আছে, জীবনের ইচ্ছে ও স্বপ্ন আছে। স্বাধীন ও সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার আছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে পথ শিশুর সংখ্যা নিয়ে যদিও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে কেউ বলেন ২১ লাখ। আবার কেউ বলেন ২৪ লাখ। তবে এদের মধ্যে ৫০ হাজার শিশু আক্ষরিক অর্থেই রাস্তায় থাকে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, পথশিশুদের ৫১ ভাগ ‘অশ্লীল কথার শিকার’ হয়। শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয় ২০ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি যৌন হয়রানির শিকার হয় মেয়েশিশু। ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ পথশিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। আর মেয়ে পথশিশুদের মধ্যে ৪৬ ভাগ যৌন নির্যাতনের শিকার।
আরেক তথ্যমতে, পথশিশুদের কেউ কেউ মাদকাসক্ত হয়ে রাস্তায়ই মারা যায়। কেউ কেউ বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে পাচার হয়ে যায়। যারা পাচারের শিকার হয়, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়।তারা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। যারা মেয়ে, তারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কোনো কোনো গ্যাং তাদের যৌনকর্মী হতে বাধ্য করে। এছাড়াও, অপরাধীচক্রগুলো স্বার্থের জন্য তাদেরকে মাদকসহ নানা অবৈধ ব্যবসায় কাজে লাগায়। এরা আসলে অপরাধী নয়। এরা অপরাধের শিকার হয়।
পথশিশুদের সবচেয়ে বেশি প্রোয়োজন খাদ্য এবং বাসস্থান। তার পর তাদের তাদের প্রয়োজন ভালো গাইড লাইন। এসব শিশুরা যদি গাইড লাইনের ভিতর দিয়ে না যায় তাহলে তাদের ভবিষ্যত নিশ্চিত অন্ধকার।এখন দেখা যায় পরিবারের সাথে থেকেও ছেলে-মেয়েরা বিপথে চলে যায়। সেখানে রাস্তায় থাকা এসব ছেলে-মেয়েদের বিপথে নিয়ে যাওয়া কোনো ব্যাপার বলে আমার মনে হয় না।
অতএব, আসুন সরকারের সহয়তায় হোক আর বেসরকারি সহয়তায় হোক তাদেরকে  থাকা-খাওয়া এবং পড়াশুনার মাধ্যমে অন্যান্য বাচ্চাদের মতো স্বাভাবিক জীবন -যাপন করার সুযোগ করে দিই। স্বাধীনভাবে বেচে থাকার ব্যবস্থা করে দিই। ওদের ইচ্ছে ও স্বপ্নকে পূরণ করার সুযোগ করে দিই। তাহলে অবশ্যই  পথশিশু নামক কোনো নাম শিশুর সাথে যুক্ত হবে না।দেশ থেকে মুছে যাবে টোকাই নামক শব্দটি।আর ফিরে পাবে স্বাভাবিক জীবন। শিশু থাকবে শিশুর মতোই। এক সময় তারাই সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়বে ও মানব বাগানের ফুল হয়ে সুভাস ছড়াবে।
মোঃ হুসাইন আহমদ
শিক্ষার্থী, মারহালাতুত তাকমিল (মাস্টার্স ডিগ্রী)
দারুস-সুন্নাহ মাদরাসা, টাংগাইল।   
CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।