শুক্রবার , ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আগৈলঝাড়ায় চার্চের নামে আত্মসাৎ করা সরকারী অনুদান ফেরত

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় খ্রিষ্ঠ ধর্মীয় উপাসনালয়ের ভুয়া সভাপতি সেজে খ্রিষ্ঠ ধর্মাবলম্বীদের বড় দিন উদযাপনে সরকারী অনুদানের অর্থ আত্মসাত। প্রশাসনিক চাপে সরকারী কোষাগারে টাকা ফেরত দিয়েছেন খ্রিষ্ট সমাজের কথিত সভাপতি মার্সেল হালদার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাজিহার গ্রামের খ্রিষ্টান সমাজ পল্লীতে। এঘটনায় স্থানীয়ভাবে তোলপাড় চলছে। অর্থ আত্মসাত করে ফেরত দেয়ার ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড় দিন’ উদযাপন করতে সরকারীভাবে আগৈলঝাড়া উপজেলায় ৬৯টি গীর্জার প্রত্যেকটিতে ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকা বরাদ্দ করে সরকার। জেলা প্রশাসক বরাবরে গীর্জা বা চার্চ প্রধানদের আবেদন অনুযায়ি বরাদ্দকৃত অর্থ ৬৯টি গীর্জা ও সমাজ প্রধানদের অনুকুলে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ২০২০সালের ২৩ডিসেম্বর অনুদানের চেক প্রদান করেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা।

গীর্জা বা সমাজ প্রধান হিসেবে রাজিহার খ্রিষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্চের) অনুকুলে ওই খ্রিষ্টান পল্লী সভাপতি সুশান্ত সরকার প্রশাসনের কাছ থেকে ২৩ডিসেম্বর সরকারী অনুদানের ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকার চেক গ্রহন করেন।

এদিকে একই খ্রিষ্টান পল্লীর কথিত সভাপতি সেজে রাজিহার গ্রামের মার্সেল হালদার “রাজিহার ক্যাথলিক চার্চের” নামে গত ৭জানুয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকার চেক গ্রহন করে ওই টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করেন।

সূত্র মতে, চার্চ প্রধানদের সরকারী অনুদান গ্রহনের জন্য স্বস্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের প্রত্যয়নপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর প্রদান পূর্বক অনুদানের চেক নিতে হয়েছে। সেখানে একই এলাকার একই গীর্জার অনুকুলে দু’জনকে কিভাবে গীর্জা প্রধান বা সভাপতির প্রত্যয়ন দিলেন চেয়ারম্যান তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

একই এলাকার একই চার্চের অনুকুলে দু’জনের দু’বার সরকারী অনুদান গ্রহনের খবর জানাজানি হলে বিষয়টি নিয়ে খ্রিষ্টান পল্লীসহ গোটা এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করা হয় প্রশাসনের কাছেও।

এ ব্যাপারে রাজিহারর খ্রিষ্টান সমাজের (ক্যাথলিক চার্জের) সভাপতি সুশান্ত সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সরকারীভাবে ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকা অনুদান উত্তোলন করে তা বড়দিন উৎসব উদযাপনে খরচ করেছেন তিনি। মার্সেল হালদার অনুদানের টাকা গ্রহন করেছেন তা তাদের কমিটির কেউ জানেন না।

প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজিহার ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন করা ব্যক্তিকে তিনি অনুদারে চেক প্রদান করেছেন। একই চার্চের নামে দুবার সরকারী অনুদান গ্রহন করা কথিত সভাপতি মার্সেল হালদারকে সরকারী টাকা ফেরত দিতেও বলেছেন তিনি।
দ্বিতীয় বার টাকা উত্তোলন করা রাজিহার ক্যাথলিক চার্চের কথিত সভাপতি মার্সেল হালদার বলেন, তিনি সভাপতি থাকা অবস্থায় অনুদানের আবেদন করেছিলেন। বর্তমান সভাপতি সুশান্ত সরকার ও সমাজের লোকজন তাকে অনুদান উত্তোলন করতে বলায় তিনি টাকা উত্তোলন করেছেন।

সভাপতি সুশান্তর আগে টাকা উত্তোলনের কথা তিনি জানতেন না। তিনি আরও বলেন, সুশান্ত যে টাকা উত্তোলন করেছে তা দিয়ে তিনি সমাজের কোন কাজে ব্যবহার করেন নি। তিনি ওই টাকায় সে আগামী মেম্বর নির্বাচনের জন্য তার অনুসারি লোকজন দাওয়াত করে খাইয়েছে। তাতে খ্রিষ্টান সমাজের কোন লোক দাওয়াত পায়নি বা খায়নি। টাকা উত্তোলনের বিষয়টি ভুল হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বুধবার সরকারী অনুদানের সমপরিমান ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকা আগৈলঝাড়া সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের ০৩০১২০০০০০০১২ হিসাব নম্বরে জমা দিয়েছেন। যার রশিদ নং- খ৪৮৬৭৩৬। ঘটনার জন্য ইউএনও বরাবরে ক্ষমা চেয়ে বুধবার লিখিত জবাব দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন জানান. ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রত্যায়ন দিয়েছে সেই মেতাবেক আমরা টাকা বরাদ্ধ করেছি। সরকারী টাকা আত্মসাতের পরে তা ফেরত দেয়ার বিষয়টি এখন প্রমানিত। উর্ধতন কর্তপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম জানান, একই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে দু’ব্যক্তি অনুদানের টাকা গ্রহন করায় তাদের কাছে লিখিত বক্তব্য চাওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের কাছেও বক্তব্য চাওয়া হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আসলে একটি প্রতারনা। তাদের লিখিত বক্তব্য পাওয়ার পরেই পরবর্তি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।