রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি:
ঝালকাঠিতে ভুয়া সাক্ষী সাজানোর অপরাধে আইনজীবী সহকারী হারুনের বিরুদ্ধে মামলা।ঝালকাঠি আদালতে ভাইয়ের পরিবর্তে ভাই সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে সাক্ষী আটক আইনজীবী সহকারী পলাতক। শপথ পাঠ করে আদালতে ভাইয়ের পরিবর্তে ভাই প্রক্সি সাক্ষ্য দেওয়ায় অপরাধে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল জজ আদালতের বিচারক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।আদালতে স্বত্বের ঘোষণার দাবির মামলা নং ৯৭/২০১৭ইং মামলায় গত ১০/১২/২০২০ইং তারিখ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় রাজাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। সাক্ষীর ও উক্ত মামলার মোহরার বিরুদ্ধে বিচারক সারাহ ফারজানা হক বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
সেদিন স্বত্বের ঘোষণার মামলার শুনানির দিন ধার্য থাকায় বাদী মিজানুর রহমান আজাদের সাক্ষ্য প্রধানের তারিখ ছিল। আজাদ উপস্থিত না থাকায় তার পরিবর্তে ভাই মাসুদ শিকদার মোহরার হারুনের পরামর্শে আদালতে সাক্ষ্য দিতে দাঁড়ালে, বিবাদী মো. এছাহাক আলীর পক্ষের বিজ্ঞ কৌসুলী মো.বাহাউদ্দিন ওলি আদালতে অনুমতি সাপেক্ষে বলেন, সাক্ষীর ডকে দাঁড়ানো ব্যক্তি আসল সাক্ষী নন। আসল সাক্ষী তারা দুজন ভাই। উক্ত মামলায় বাদীর নাম করণে তিনি মিথ্যা সাক্ষ্য প্রধান করছেন। প্রকৃত পক্ষে সাক্ষীর ডকে দাঁড়ানো ব্যক্তি হলেন মো. মাসুদ শিকদার। বিজ্ঞ আইনজীবীর প্রতিবাদে আদালত সাক্ষীর ডাকে দাঁড়ানো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে স্বীকার করেন যে তিনি ১নং বাদী সাক্ষী মো. মিজানুর রহমান আজাদ নন। এই মর্মে তিনি আদালতে জবানবন্দি প্রদান করলে আদালত তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন।
রাজাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল জজ, সারাহ ফারজানা হক এর আদালতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সে আদালতের সামনে শপথ পাঠ করে কেন মিথ্যা সাক্ষী দিলেন বিচারক জানতে চাইলে, মাসুদ শিকদার স্বীকার করেন যে,তাকে তার বিজ্ঞ আইনজীবীর মোহরার মো.মামুনুর রশিদ ওরফে (হারুন) এই মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ায় সে এই সাক্ষ্য আদালতে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে আদালতের পুলিশের মাধ্যমে মাসুদ শিকদারকে আটক করা হয়।
অপরদিকে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড় কৈবর্ত খালী গ্রামের মৃত আমজেদ খানের ছেলে হারুন আইনজীবী সহাকারী হয়ে এলাকার নিরীহ মানুষের উপর চালিয়েছে মামলার নির্যাতন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন ঝগড়া হলেই হারুন স্ত্রীর পক্ষে গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। জমি জমা নিয়ে বিভিন্ন মানুষের উপর মামলা দিয়ে বছরের পর বছর আদালতে হাজিরা দিচ্ছে। এলাকা বাসীর অভিযোগ তার কাছে অনেক নারীরা নাকের নাক ফুল, আংটি, স্বর্ণের বালাসহ বিভিন্ন জিনিসের বন্ধক রেখে তার মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকের ভিটে মাটি ছাড়াও করেছে এই হারুন হুজুর।
মাসুদ শিকদার ও মোহরার মামুনুর রসিদ হারুন কে দন্ডবিধির ৪১৯/৪৬৮/৪৭১/৪৬৫/৩৪ ধারার অধীন অপরাধ করেছেন বলে বিবেচিত হয়। ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে নালিশী দরখাস্ত খানার রাজাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল জজ, সারাহ ফারজানা হক বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে (১) মাসুদ শিকদার, পিতা.মৃত জলিল শিকদার,সাং নিজ গালুয়া পো.কৈবর্তখালী ও (২) মো.মামুনুর রসিদ (হারুন) পিতা.মৃত আমজেদ আলী শিকদার মোহরার কার্ড নং ১৫৭ জেলা আইনজীবী সমিতি, গ্রাম বড় কৈবর্তখালী উভয় থানা ও জেলা ঝালকাঠি। মামলা নং সি আর ৩৪৬/২০২০(ঝালকাঠি সদর) দায়ের করেন। ২নং আসামি মোহরার হারুন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে। এই মামলায় আইনজীবীসহ ৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
উক্ত মামলার আইনজীবী মো.বাহাউদ্দিন হাসান ওলি বলেন, আমি বিবাদী পক্ষের আইনজীবী হিসাবে ছিলাম ঐদিন মালার বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানির দিন ধার্য ছিল কিন্তু ১ নং সাক্ষী মো.মিজানুর রহমান আজাদের পরিবর্তে তার ভাই সাক্ষী দেওয়ার আমি আদালতে অবহিত করি। আদালত ঘটনাটি আমলে নিয়ে জরড়তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
CBALO/আপন ইসলাম