রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের নিয়ে ভর সভায় অনাকাঙ্খিত মন্তব্য করে চরম বিতর্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছেন রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াস তালুকদার। সভায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের তোপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্য সভায় হাত জোর করে ক্ষমা চাইলেন ওই চেয়ারম্যান।
বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের নিয়ে ভর সভায় আপত্তিকর মন্তব্য করায় চরম বিতর্কের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস ও মহান বিজয় দিবস পালনের প্রস্তুতি সভা। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস ও মহান বিজয় দিবস পালনের প্রস্তুতি সভায় সোমবার সকালে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম এর সভাপতিত্বে সোমবার সকালে পূর্ব নির্ধারিত উপজেলা প্রশাসনের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালনের সভা শুরু হয়।
সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস তালুকদার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের নিয়ে অনভিপ্রেত বক্তব্য প্রদান করেন।সভায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক (অবঃ) লিয়াকত আলী হাওলাদার ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের উপজেলা আহ্বায়ক লিটন আবদুল্লাহ তাৎক্ষনিক চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদারের বক্তব্যর বিরোধিতা করেন। সভায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে দেখা দেয় চরম বিতর্ক। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সভার সভাপতি মো. আবুল হাশেম চেয়ারম্যানকে নিবৃত করতে ব্যর্থ হন।
অন্যদিকে গৈলা মডেল ইউপি চেয়ারমম্যান মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রসঙ্গে কথা বলায় সেটা নিয়েও বিতর্কদেখা দেয়। পরে সভার প্রধান অতিথি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত সভায় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও ভাতা নিয়ে কটাক্ষ করে কথা বলার চরম বিরোধীতা করে প্রায় ঘন্টা ব্যাপি বক্তব্য রাখতে গিয়ে চেয়ারম্যানদের তুলোধুনো করে বক্তব্য রাখেন। এক পর্যায়ে সভায় অন্যান্য উপস্থিতি ইউপি চেয়ারম্যানকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানালে রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার ও গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান প্রকাশ্য সভায় তাদের বক্তব্য পরিহার করে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। সভায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে করোনা মোকাবেলায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
প্রশাসন আয়োজিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) আরিফুর রহমান প্রিন্স, অধ্যক্ষ সরদার আকবর আলী, ভাইস চেয়ারম্যান মলিনা রানী রায়, রফিকুল ইসলাম তালুকদার, ওসি (তদন্ত) মো. মাজহার ইসলাম, শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন অধিকারী, সমাজসেবা অফিসার সুশান্ত বালা, প্রকৌশলী রাজকুমার গাইন, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা সরদার, বিপুল দাস, প্রেসক্লাব আহ্বায়ক কেএম আজাদ রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকবৃন্দ।উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যানরা তাদের দেয়া অনভিপ্রেত বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ায় সভায় তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
CBALO/আপন ইসলাম