পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলায় ছলিমপুর (বক্তারপুর) জয়নগরের রবিউল ইসলাম বিশ্বাসের স্ত্রীর নামে “মেসার্স নূরুন্নাহার কৃষি খামার” মিথ্যা তথ্য দিয়ে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখা থেকে প্রায় ২কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ গ্রহন করা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, মেসার্স নূরুন্নাহার কৃষি খামার” এর বিপরীতে ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্পের মধ্যে নিজ¯^ তহবিল দেখানো হয়েছে ৮৮ লাখ টাকা। খামার মালিক কর্তৃক ব্যাংকে জামানত হিসেবে ১কোটি ৭১ লাখ টাকা অর্থাৎ ৬৬% জামানত দেখানো হয়েছে। যা ব্যাংক ঋনের যথাযথ শর্ত পালন করা হয়নি। সরেজমিনে খামারে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পে ৭০ টি ষাড় ও গাভী থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ১৫ টি বাছুর গরু ও ৩টি ছাগল। এই ১৫ টি বাছুর গরু ও ৩ টি ছাগলের বিপরীতে করোনা কালীণ সঙ্কটময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তিনি আবারও সাড়ে ৬৪ লাখ টাকা প্রনোদনার জন্য আবেদন করেছেন। সেক্ষেত্রে কোন জামানত দেখানো হয়নি। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় ঋণ গ্রহীতা নুরুন্নাহার ১লক্ষ টাকা বেতনের ঢাকায় চাকরি করেন। সেই সুবাদে অধিকাংশ সময়ে তিনি রাজধানী ঢাকাতে অবস্থান করেন। অথচ এতো টাকার এই প্রকল্পের দেখা শোনার জন্য মাত্র ১৩ বছর বয়সী ১জন কিশোরকে রেখেছেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ এলাকার কৃষকরা বলেন, অনেকেই শর্ত পূরণ করে ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু কারো ব্যাংক ঋণ পাশ না হলেও নূরুন্নাহার কৃষি খামার ঠিকই ঋণ পেয়ে থাকেন। তিনি ঢাকা থেকে উপরে ম্যানেজ করে চলেন। অনেকের মনেই প্রশ্ন তিনি কিভাবে ঋণ পান ? তার উপরে আসলে কারা আছেন? আবার উপরে যারা রয়েছেন তারা নুরুন্নাহার কে ঋণ পাইয়ে দিয়ে বিশেষ কোন সুবিধা নিচ্ছেন কিনা না সেটাও প্রশ্ন থেকে যায় সবার কাছে। আরও জানা জানা যায় বিগত ১০ বছর নুরুন্নাহার উপর মহলের প্রভাব খাটিয়ে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখার ১৭ জন ম্যানেজারকে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করেছেন।
এ বিষয়ে কৃষক নূরুন্নাহারের খামারে সরেজমিনে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করায় তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোন সাংবাদিক তার পেছনে লেগেছে। আমার বিরুদ্ধে প্রিন্ট মিডিয়ার যারা সংবাদ প্রকাশ করেছেন,আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। তিনি আরও বলেন আমাকে উপরের যারা ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন তাদের কাছেও বিষয়টি জানাবো।
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ঈশ্বরদী শাখার ম্যানেজার আব্দুস সবুর শেখ বলেন, এই শাখায় আমি নতুন এসেছি। এ ব্যাপারে তেমন কিছু আমি জানি না। আপনাদের বিস্তারিত কোন কিছু জানার থাকলে “মেসার্স নূরুন্নাহার কৃষি খামার” ঋণ পাশের সময়কালীণ ম্যানেজার মো. ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড পাবনা জোন এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ঈশ্বরদী উপজেলার কৃষিতে জাতীয় পর্যায়ে ৩ বার পুরস্কারপ্রাপ্ত সফল নারী উদ্যোক্তা ও কৃষক নুরুন্নাহার এর ব্যাংক ঋণের অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, বড় ঋণ পাশ হয় উপর থেকে। করোনা কালীন সময়ে কৃষক নুরুন্নাহার ৬৪ লক্ষ টাকা প্রণোদনা চেয়ে ঈশ্বরদী শাখায় আবেদন করেছেন এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন কোনভাবেই এই প্রণোদনার টাকা তিনি পাবেন না।
CBALO/আপন ইসলাম