শনিবার , ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২৮শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পাবনার সাঁথিয়ায় হত্যা মামলায় সিআইডির গণ গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগ এলাকাবাসী ঘর ছাড়া লুটপাট অব্যাহত

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০

মোঃ মামুন হোসেন পাবনা প্রতিনিধি :

পাবনার সাঁথিয়ায় পৌর আমোষ গ্রামে এনামুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থ্যা সিআইডি’র গণ গ্রেফতার ও বাণিজ্য’র অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রেফতারের ভয়ে মুল আসামীসহ ও তার পুরুষ আত্মীয় স্বজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদিকে এলাকায় পুরুষ না থাকায় হত্যা মামলার বাদীসহ স্থানীয় কতিপয় দালালদের বিরুদ্ধে বাড়ি ঘর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণ গ্রেফতারের ভয়ে ভীত একাধিক গ্রামবাসী জানান, গত ১ আগষ্ট কোরবানীর ঈদের দিন কোরবানীর সমাজ বিভক্ত নিয়ে স্থানীয় দুটি গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের প্রায় ৬/৭জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের ৪ জনকে সাঁথিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গুরত্বর আহতরা হলেন, সাঁথিয়া আমোষ গ্রামের তফিজ সেখের ছেলে আকরাম ও তার ভাই এনামুল এবং অপরপক্ষের মৃত টালোক শেখের ছেলে বাবুল ও সমশের সেখের ছেলে আনারুল। গুরতর আহত এনামুলসহ ৪ জনকে পাবনা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

 

পাবনা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এনামুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানেই তিনি চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১১ আগষ্ট বিকালে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় আহত এনামুলের ভাই কামরুল ইসলাম বিগত ১১ আগষ্ট সকালে সাঁথিয়া থানায় ১০ জনের নাম উল্ল্যেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনকে আসামী উল্ল্যেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৩ তাং-১১-০৮-২০২০ইং। মামলা দায়েরের দিন বিকালে এনামুল মারা যায়। এনামুল মারা যাবার পর এনামুলের আত্মীয় স্বজনসহ স্থানীয় একটি দুষ্ট চক্র আসামীসহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এসময় স্থানীয় আব্দুল জব্বারের ছেলে হিরুর বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। মৃত্যুর পর বাদী পক্ষসহ স্থানীয়রা আসামী ও তাদের আত্মীয় স্বজনসহ প্রতিপক্ষের নামে মামলা হামলাসহ ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। এরপর মামলাটি সিআইডিতে চলে গেলে অব্যাহত পুলিশি অভিযানে এলাকা পুরুষ শুন্য হয়ে গেলে চলতে থাাকে লুটপাট। সেখানে ২০/২৫টি বাড়ি ও ২টি দোকানে ব্যাপক লুটপাট করা হয়।

 

সিআইডি মামলা তদন্তকালে স্থানীয় কালাম মাষ্টারকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর এসআই মাসুদ আটক করে সিআইডি অফিসে নিয়ে আসেন। সেখানে লাখ টাকা উৎকোচের বিনিময়ে একদিন পর কালাম মাষ্টারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর এসআই মাসুদ বাদীর সাথে লিয়াজো করে আসামীসহ তাদের আত্মীয় স্বজনকে গ্রেফতারের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে ও আসামী ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আসামী ও তার স্বজনরা সিআইডির অভিযানে ভীত হয়ে পুরুষরা নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরপর গত ১৮ তারিখে নাম উল্ল্যেখিত ১০জন আসামীর মধ্যে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ ৭জনের জামিন মঞ্জুর করেন। এদিকে সিআইডির অব্যাহত অভিযানের মুখে বাদী পক্ষ লুটপাট হালাল ও হত্যাকান্ডটিকে বাণিজ্যে রুপদান করতে পুলিশকে একের পর এক প্রতিপক্ষ বিভিন্ন ব্যাক্তির নাম জমা দিতে থাকে। একটি সুত্র জানায় এজাহার নামীয় আসামী ছাড়াও আরো ৪৫ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয় সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তার কাছে।

 

এরই ধারাবহিকতায় বাদী পক্ষ গত শুক্রবার রাতে সাঁথিয়ার পুর্ব ভবানীপুরে শশুর বাড়িতে অবস্থানরত আয়েজ শেখের ছেলে রেজাউলকে ধরে মারপিট করে সিআইডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদের কাছে তুলে দেন। এসআই মাসুদ রেজাউলকে পাবনা সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এসআই মাসুদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বাদী পক্ষ না আমরা অভিযান চালিয়ে রেজাউলকে গ্রেফতার করেছি। রেজাউল এজাহার ভুক্ত আসামী কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এজাহারের বাইরেও আসামী থাকে। এটার জবাব তো আমি আপনাকে দিতে পারি না। মামলার তদন্তের স্বার্থে যাকে ইচ্ছা তাকে গ্রেফতার করতে পারি। রেজাউলকে যেখান থেকে আটক করা হয়েছে, সেই পুর্ব ভবানীপুরের বাসিন্দা শাকিল জানান, রাত ১০/১১টার দিকে ১০/১২জন ব্যাক্তি বাড়ির চারদিকে ঘিরে ফেলে। তারপর রেজাউলকে ধরে টেনে হিচড়ে মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে মারপিট করে। পরে এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানালে ৩/৪জন ব্যাক্তি নিজেদেরকে সিআইডি পুলিশ পরিচয় দিয়ে রেজাউলকে নিয়ে চলে যায়। সাথে থাকা ৮/১০জন সিএনজি নিয়ে চলে যায়।

 

সিআইডির ওসি আব্দুর রাজ্জাকের মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, আমি সাক্ষি দেওয়ার জন্য পাবনার বাইরে আছি। তার কাছে রেজাউল গ্রেফতারের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা স্বাধীন। তারা আমাকে না জানিয়েও অভিযানে যেতে পারে। গ্রেফতার বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাবনায় এসে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। সিআইডির গ্রেফতার বাণিজ্যের ভয়ে স্থানীয় বেশিরভাগ পুরুষ এলাকা ছেড়ে অন্যাত্র আশ্রয় নিয়েছে। এ সুযোগে কতিপয় ব্যাক্তি মহিলাদের জিম্মি করে বাড়ি ঘর লুটপাট করে চলেছে। এলাকাবাসী গণ গ্রেফতার ও লুটপাটের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। সেই সাথে লুটপাট হওয়া মালামাল উদ্ধার করে ক্ষতিগ্রস্থদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পাবনার পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার অনুরোধ জানান। আরো জানা যায়, ঘটনার দিন অপরপক্ষের আহতরা বাদী হয়ে পাবনার আদালতে মামলা দায়ের করেছে।

 

CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।