শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

  দেশে নতুন আইনে প্রথম সাজা টাঙ্গাইলে মাদ্রাসা ছাত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় ৫ জনের ফাঁসির আদেশ 

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০
মুহাইমিনুল (হৃদয়)টাঙ্গাইল থেকেঃ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ মামলার রায়ে পাঁচজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্নাল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রাইবু্নালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে দুইজন আসামী উপস্থিত ছিলো। বাকি তিনজন আসামী পলাতক রয়েছে। আদালতে উপস্থিত দন্ডিত দুইজন আসামী হলেন, মধুপুর উপজেলার চারালজানী গ্রামের বদন চন্দ্র মণি ঋষির ছেলে সঞ্জিত (২৮), এই উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের শ্রি দিগেন চন্দ্র শীলের ছেলে গোপি চন্দ্র শীল (৩০)। পলাতক আসামীরা হলো, একই এলাকার সুনীল চন্দ্র শীলের ছেলে সাগর চন্দ্র শীল (৩৩), সুনিল মণি ঋষির ছেলে সুজন মণি ঋষি (২৮) ও মণিন্দ্র চন্দ্রের ছেলে রাজন চন্দ্র (২৬)।
রাষ্ট্রপক্ষের এই মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার। মানবাধিকার বাস্ত্মবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ মামলা দায়ের থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ভিকটিমকে আইনগত সহায়তা প্রদান করেন। রায়ে সচেতন মহলসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সবাই সন্তুুষ্টি প্রকাশ করে এ ধরণের মামলা দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি ও রায় কার্যকর করার দাবি জানান সবাই।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্নালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আক্তার জানান, ২০১২ সনে দন্ডিত আসামীদের মধ্যে মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের সাগর চন্দ্র শীলের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে ভূঞাপুর উপজেলার মাদ্রাসা ছাত্রী ওই ভিকটিমের পরিচয় হয়। একই বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে সকালে ভূঞাপুর উপজেলার শালদাইর ব্রীজের কাছে পৌছলে সাগর কৌশলে একটি সিএনজিতে এলেঙ্গা নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে মধুপুরে চারাল জানী গ্রামে তার বন্ধু রাজনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার চার বন্ধু তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। সাগর হিন্দু বলে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে। পরে ওই রাতে সাগর রাজনের বাড়ীতে আটক রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ১৭ জানুয়ারি রাতে তাকে বংশাই নদীর তীরে নিয়ে যায়। সেখানে তারা পাঁচজনে মিলে পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষন করে ফেলে রেখে চলে যায়।
পরদিন ভোরবেলা স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমের বাড়ীতে মোবাইলের মাধ্যমে খবর পাঠানো হলে স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে ভিকটিম বাদী হয়ে ভুয়াপুর থানায় ১৮ জানুয়ারি দন্ডিতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুজন মণি ঋষিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরন করে। ১৯ জানুয়ারি আসামী সুজন স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। সুজন তার জবানবন্দিতে সাগর, রাজন, সনজিত ও গবি চন্দ্র জরিত থাকার কথা উল্যেখ করে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরিক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরম্নদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করে। পরে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠণের মধ্যদিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
আসামী পক্ষের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা মিয়া বলেন, আসামীদের পর্যাপ্ত আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়নি। রায়ে আসামীপক্ষ সন্তুুষ্ট নয়। তারা উচ্চ আদালতে আপীল করবে বলে জানান তিনি।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার বলেন, রায়ে তারা সন্তুুষ্ট হয়েছে। এটি ধর্ষণ মামলায় দেশে প্রথম রায়। এই রায়ের মাধ্যমে দেশে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হবে এবং এরই সাথে ধর্ষণসহ যে কোন ধরণের নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতি মানুষ সচেতন হবে এবং এ ধরণের অপরাধ থেকে মানুষ দূরে থাকবে।
মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। এই মামলাটি দীর্ঘ আট বছর চলমান ছিলো। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আজ (বৃহস্পতিবার) এই দৃষ্টান্ত মুলক রায় প্রদান করেন। পলাতক আসামীরা দ্রুত গ্রেপ্তার হলে এবং রায় কার্যকর হলে মানুষের মাঝে শস্তি ফিরে আসবে। মানুষের মধ্যে এ ধরণের অপরাধ প্রবণতা দূর হবে।
CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।