মো:মামুন হোসেন ,পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার বেড়া উপজেলার আওতাধিন দুটি ঘাটের ইজারার ৫কোটি ৭৬ লাখ টাকা জেলা প্রশাসক আটকিয়ে রাখার প্রতিবাদ এবং উন্নয়ন সমš^য় সভায় বিষয়টি অন্তভুক্তি না করার প্রতিবাদ করায় তাকে নিয়ে এমন মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে একটি মহল। সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আব্দুল বাতেন জানান, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকির সাথে তার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। তারপরেও কেন এমন মিথ্যা অপবাদ দিলেন তা আমি বুঝতে পারছি না। সঠিক তদন্ত হলে মুল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বেড়া পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আব্দুল বাতেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। বুধবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বেড়া পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বেড়া উন্নয়ন ফোরামের ব্যানারে তিনি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ তাঁর দেড় শতাধিক সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী-নটাখোলা ও কাজীরহাট আমদানি-রপ্তানি ঘাট দুটি বিধি মোতাবেক উপজেলা পরিষদের আওতাভূক্ত। উপজেলা পরিষদেরই ঘাট দুটির রাজস্ব আদায়ের কথা। কিন্তু সম্প্রতি পাবনা জেলা প্রশাসন তা উপেক্ষা করে ঘাট দুটি থেকে রাজস্ব আদায়ের (খাস আদায়) উদ্যোগ নেয়।
বিষয়টি বেড়াবাসীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বরের উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। পরবর্তী সভায়ও এটি অন্তর্ভূক্ত করার কথা ছিল। অথচ ঘটনার দিন অর্থাৎ গত সোমবার (১২ অক্টোবর) উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় এ বিষয়টি আলোচনা থেকে কৌশলে বাদ দেওয়া হয়। এতে তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন ও আলোচনায় অন্তর্ভূক্ত করার কথা বলেছেন মাত্র। এ ছাড়া সেখানে কোনো ধাক্কাধাক্কি বা ইউএনওকে লাঞ্ছিত করার কোন ঘটনা ঘটেনি। আমি স্বভাবতই জোড়ে কথা বলি সেটাকে যদি কেউ ভিন্নখাতে নিয়ে যায়, সে বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই।
ইউএনওর সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক উল্লেখ করে আব্দুল বাতেন আরও বলেন তাঁর বিরুদ্ধে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করে ওইদিন ঘটনাটির ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, ইউএনও উন্নয়ন সমন্বয় সভার দিন আমার এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য বসার কোন স্থান রাখেননি। তার মানে ঘটনা সৃষ্টি করা হবে তা পুর্ব পরিকল্পিত। সেই সাথে তিনি আরো জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সকল ক্ষমতার মালিক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেয়ারম্যান সাহেবের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। চেয়ারম্যান সাহেব যে সিদ্ধান্ত নিবেন, সেটার শুধু বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করবেন। ঘটনার দিন উপজেলা নির্ভাহী কর্মকর্তা কৌশলে রাজস্বের টাকা উপজেলা নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বাতেন বলেন, আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। তিনি দাবী করেন ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত হোক। তদন্ত হলেই সঠিক বিষয়টি বের হয়ে আসবে। কারণ বরখাস্ত করায় বিষয়টি নিয়ে এখন সঠিক তদন্ত হবে,তদন্ত হলে সত্য তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
উল্লেখ্য গত সোমবার (১২ অক্টোবর) উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মাসিক সভাকালে মেয়র আব্দুল বাতেনের বিরুদ্ধে ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকীকে লাঞ্ছিত এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ ওঠে। এরই ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) তাঁকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে বেড়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শায়লা শারমিন ইতিসহ সুশিল সমাজের প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
CBALO/আপন ইসলাম