শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আগৈলঝাড়ার নয়নাভিরাম লাল শাপলার রাজ্যে ছুঁটছেন প্রকৃতি প্রেমিরা কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারের হুমকির মুখে জীব বৈচিত্র

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিলে ফুটছে নয়নাভিরাম লাল শাপলা। বর্ষা থেকে হেমন্তর শেষ পর্যন্ত বিলাঞ্চলের জলাশয়ে ও নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মো লাল শাপলা। এই শাপলা মানুষের খাদ্য তালিকায় আবহমানকাল থেকে যুক্ত রয়েছে। কয়েক বছর আগেও বর্ষা এবং হেমন্তের সকালে দিগন্ত জোড়া খাল-বিলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকত লাল শাপলা। সকালের দিকে জলাশয়ে চোখ পড়লে রং-বেরংয়ের শাপলার বাহারী রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। তবে অধিক ফলনের লক্ষ্যে জমিতে অধিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাল-বিল ও জলাশয় ভরাটের কারণে আগৈলঝাড়া উপজেলার বিলাঞ্চল থেকে কমে যাচ্ছে লাল শাপলা।

আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিন বাগধা গ্রামের প্রবীন বাবু লাল জানান, আষাঢ় থেকে অগ্রহায়ন মাস পর্যন্ত উপজেলার বাগধা ইউনিয়ন, বাকাল ও সাতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন জলাশয়ে শাপলা ফুল ফোটে। কিন্তু বর্তমানে আগের মত লাল শাপলা তেমন দেখা যায় না। তবে আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত বিলাঞ্চল বিশেষ করে সীমান্তবর্তী বাগধা-সাতলা এলাকায় এখনো ফুটছে নয়নাভিরাম লাল শাপলা। বিলের পর বিল এই শাপলা দেখতে নৌকায় করে বিলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেশী বিদেশী প্রকৃতি প্রেমীরা। অনেকে আবার শাপলা বিক্রি করে জীবিকাও নির্বাহ করে আসছেন। পর্যটকদের হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে লাল শাপলা।

শাপলার বিলে সকাল ও সন্ধ্যায় মুখরিত হয় পাখির কলতানে। দেশী বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এই শাপরঅর বিলে। তবে পর্যটকদের আধ্যিক্যর কারনে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় জানান, শাপলা প্রধানত দু’রংয়ের হয়ে থাকে। লাল ও সাদা। এরমধ্যে সাদা ফুল বিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ও লাল রঙ্গের শাপলা ঔষধী গুনে সমৃদ্ধ। শাপলা খুব পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ সবজি। সাধারণ শাক-শবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুন অনেকে বেশী। শাপলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। শাপলায় ক্যালসিয়ামের পরিমাণ আলুর চেয়ে সাতগুন বেশি।

তিনি আরো জানান, লাল শাপলা চুলকানী ও রক্ত আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী। প্রতি ১’শ গ্রাম শাপলায় রয়েছে খনিজ পদার্থ ১.৩ গ্রাম, আঁশ ১.১ গ্রাম, খাদ্যপ্রাণ ১৪২ কিলোগ্রাম, ক্যালোরি-প্রোটিন ৩.১ গ্রাম, শর্করা ৩১.৭ গ্রাম, ক্যালশিয়াম ৭৬ মিলিগ্রাম। আবার শাপলার ফল দিয়ে চমৎকার সু-স্বাদু খৈ ভাজা যায়। এই ফলটি গ্রামগঞ্জে ঢ্যাপের খৈ নামে পরিচিত। মাটির নিচের মূল অংশকে (রাউজোম) আঞ্চলিক ভাষায় শালুক বলে। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বিল-ঝিল-হাওড়-বাঁওড়-পুকুরের পানি যখন কমে যায় তখন গ্রাম গঞ্জের লোকজন জমি থেকে শালুক তোলে। শালুক খেতেও বেশ সু-স্বাদু। গ্রাম-গঞ্জে একসময় অভাবী সংসারে শালুক সিদ্ধ করে দিনের খাবার হিসেবেই গ্রহন করা হত। শালুক আমাশয়ের জন্য খুবই উপকারী সবজী। সহজলভ্য হওয়ায় গ্রামের মানুষ প্রতিদিনই শাপলা খাদ্য হিসাবে গ্রহণ আসছে।

কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার ও কার্প জাতীয় মাছ চাষের কারণে শাপলার বংশবৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে হুমকির মুখে পরবে জীব বৈচিত্র। তাই জীব বৈচিত্র ধরে রাখতে সরকারের পরিকল্পনা নেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।