রবিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

চলনবিলে পদ্ম ফুলে নয়নাভিরাম দৃশ্য

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
দীর্ঘ ৩৫ থেকে ৪০ বছর আবারো চলনবিলে ফুটেছে পদ্ম ফুল, যাকে জলজ ফুলের রানী বলা হয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় এ বছর সারি সারি মাঠে ফুটেছে অপরূপ সৌন্দর্যের পদ্ম ফুল। আর এ ফুল দেখতে আসছেন পর্যটক আর প্রকৃতি প্রেমীরা। রুপবৈচিত্র্য দেখে প্রকাশ করছেন তাদের মুগ্ধতা। ভাদ্রের মাঝামাঝি সময়ে কলি থেকে ফুল ফোটা শুরু হয়ে এখন আশ্বিনের শুরুতেও তা চলমান রয়েছে। শীত আসা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জলজ উদ্ভিদ গবেষকরা। তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের দোবিলা ও ঘরগ্রামের মাঠে ফুটেছে এই পদ্ম ফুল।

তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি সনাতন দাস বলেন, চলনবিলে এ পদ্ম ফুটেছে দীর্ঘ প্রায় চার দশক পরে। হারিয়ে যাওয়া পদ্ম ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত চলনবিলবাসী। শুধু তাড়াশ নয়, পার্শ্ববর্তী গুরুদাসপুর উপজেলার হাড়িভাঙা বিলেও ফুটেছে পদ্ম ফুল। খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দোবিলা পদ্মফোটা বিল পরিদর্শন করেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মো. জামালের গবেষণাতেও প্রায় একই চিত্র উঠে এসেছে। তিনি ১৯৮৫ সাল থেকে ৮৭ সাল পর্যন্ত চলনবিল নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। সেখানে তিনি তাড়াশ উপজেলায় বিলে পদ্ম দেখেছেন। কিন্তু এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের গবেষকরা এ অঞ্চলে আর কোনো পদ্ম ফুল দেখতে পাননি, বলছিলেন অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ।

তাড়াশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গাজী আব্দুর রহমান চলনবিল নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, এক সময় চলনবিলে হরেক রকম জলজ উদ্ভিদ পাওয়া যেতো। বিলের বিভিন্ন প্রান্তরে ফুটে থাকতো শাপলা ও পদ্ম। পদ্ম ফোটার সেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য মানুষকে আবেগ তাড়িত করতো। বিলের মানুষ পদ্মপাতায় ভাত খেতো। হাট থেকে লবণ, জিলেপি ও গুড় পদ্মপাতায় মুড়িয়ে নিয়ে আসতো। বিলের জলাধার দিনের পর দিন কমতে থাকায় ধীরে ধীরে তা হারিয়ে যায়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পদ্ম ফুল জন্মে। এগুলোকে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দুটি প্রজাতিতে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে এশিয়ান বা ইন্ডিয়ান পদ্ম। অন্যটি হচ্ছে আমেরিকান বা ইয়োলো লোটাস। এশিয়ান পদ্ম আবার দুই রঙে দেখা যায়, একটি মসৃণ সাদা, অন্যটি হালকা গোলাপি।

আমাদের দেশে যেসব পদ্মফুল দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো এশিয়ান বা ইন্ডিয়ান লোটাস বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ।

অধ্যাপক সাবরিনা প্রায় চার দশক পরে চলনবিলে পদ্ম ফিরে আসা প্রসঙ্গে বলেন, পদ্ম একটি বহুবর্ষজীবি জলজ উদ্ভিদ। পদ্ম ফুলের একটি পরিপক্ষ বীজ এক হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। অনুকূল পরিবেশ পেলে সে আবারও বংশ বিস্তার করে থাকে। চলনবিলে ফোটা পদ্মের ক্ষেত্রেও সেটিই হয়েছে।

চলনবিলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন নামে এক হাজার ৭৫৭ হেক্টর আয়তনের ৩৯টি বিল। এ সব বিলে পদ্ম, শাপলা, মাখনা, সিঙ্গট, গেচু, চেচুয়া, ভাতসোলাসহ বহু প্রজাতির সপুষ্পক, ফার্ন, মস ও শৈবাল পাওয়া যেতো। এর মধ্যে অনেকগুলোই বিপন্ন এবং বেশ কিছু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।