শনিবার , ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

কলারোয়ার সরসকাঠী দাখিল মাদ্রাসারায় নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ; অবশেষে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার:

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে লোক নিতে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের বাঁকালে দারুল হাদিস আহম্মাদিয়া সালাফিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট শাখায় খোঁজ খবর নিলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ায় কোন ঘোষণা ছাড়াই নাটকীয় নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে সকাল থেকে অপেক্ষমান পরীক্ষার্থীরা মাদ্রাসার সুপার ও নিয়োগ কমিটির কাউকে না পেয়ে নিরাশ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ফিরে যান। নৈশ প্রহরী পদে পরীক্ষা দিতে আসা প্রার্থী মো. আব্দুল জলিল জানান, ‘সরসকাটি মাদ্রাসায় নৈশ প্রহরীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেছিলাম।

 

এরপর হঠাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার (পরীক্ষার পূর্বের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৭টার পরে আমার বাসায় একটা চিঠি পাঠানো হয় এবং জানানো হয় কাল সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরায় নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে’। আয়া পদের প্রার্থী মোছা. তনুজা খাতুন কাকলীও একই কথা জানান। তারা আরও জানান, ‘সকালে পরীক্ষা হবে রাতে আমাদের জানানো হয়েছে। পরীক্ষার আগের রাতে সময়সূচি জানানো হয় এমনটা আগে কখনো দেখিনি বা শুনিনি। যে কোন পরীক্ষা দেওয়ার আগে মানসিক প্রস্তুতির একটা বিষয় থাকে। এখন বুঝতে পারছি এটা নাটকীয় পরীক্ষা ছাড়া কিছুই না’। তবে সকাল ১০ টায় সরসকাটি মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুর রশিদ পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত না থাকায় তাকে ফোন দিলে তিনি জানান আমি পথিমধ্যে আছি কেন্দ্রে আসছি। তবে পরে তিনি আর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেননি। পরবর্তীতে তাকে ফোন দিলে তিনি ফোনটি বন্ধ করে রাখেন। এদিকে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেও কর্তৃপক্ষের কোন খোঁজ না পেয়ে অবশেষে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে চলে যান।

 

পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকা সরসকাটি মাদ্রাসা কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য আব্দুল খালেক জানান, আজ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে তাই আমি এখানে এসেছি। কয়েকজন পরীক্ষার্থীরাও এসেছে পরীক্ষা দিতে। তিনি আরও জানান, নৈশ প্রহরী পদের বিপরীতে ১০ জন আবেদন করেছে এবং আয়া পদের বিপরীতে ৭ জন আবেদন করেছে। সাতক্ষীরার দারুল হাদিস আহম্মাদিয়া সালাফিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার গোলাম সরোয়ার জানান, ‘আমাদের মাদ্রাসায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এখান থেকে ৩দিন আগে সরসকাটি মাদ্রাসা থেকে আমাদের জানানো হয়েছে’। তবে পরীক্ষার আগের রাতে কেনো পরীক্ষার্থীদের সময়সূচি জানানো হল, পরীক্ষার সময়সূচি দিয়েও কেনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি এবং প্রার্থীরা পরীক্ষা দিতে এসে ফিরে গেল এ বিষয়ে সরসকাটি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির ও নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি বজলুর রহমান সাংবাদিকদের কোন উত্তর দিতে পারেননি। এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সরসকাটি মাদ্রাসার নিয়োগ বোর্ডের সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, ‘আজ পরীক্ষা কি’না সে বিষয়টি আমি নিশ্চিত না। আমি এখনও চিঠি পায়নি।

 

তবে মৌখিকভাবে শুনেছি আজ নাকি পরীক্ষা। এছাড়া ঢাকা থেকে ডিজির প্রতিনিধি আসবে শুনলাম। চিঠি হয়েছে এখনও হাতে পায়নি তবে চিঠিটা অনলাইনে দেওয়ার কথা আছে। পরে জানলাম ঢাকা থেকে তিনি চিঠিটা হাতে হাতে নিয়ে আসবেন’। তবে প্রার্থীরা পরীক্ষা দিতে এসেছে এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, ‘শুনলাম নিয়োগে অনিয়ম হচ্ছে এজন্য কমিটির সদস্যদের পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য বলেছি’। এদিকে ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অর্থ বাণিজ্যের বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নৈশ প্রহরী পদের প্রার্থী মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী ক্ষেত্রপাড়া এলাকার মো. মহিদুল ইসলামের ছেলে মো. রিপন হোসেন ও একই এলাকার আব্দুল জব্বার বিশ্বাসের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন।

 

লিখিত অভিযোগে তারা জানান, বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টায় মাদ্রাসার পিয়ন তাদের বাড়িতে একটি চিঠি দিয়ে আসে এবং জানায় সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরায় নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তারা উল্লেখ করেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২ জন প্রার্থীদের থেকে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে তাদেরকে চুড়ান্ত করেছেন। এজন্য নামমাত্র পরীক্ষা নিতে আমাদের পরীক্ষার ১২ ঘণ্টা আগে সময়সূচি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী জেরিন কান্তা জানান, সরসকাটি মাদ্রাসায় লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এ বিষয়ে আমি অবগত নেই।

 

তাছাড়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা মাদ্রাসা কমিটি আমাকে কিছুই জানায়নি’। দুই প্রার্থীর দেয়া অভিযোগের বিষয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, ‘আমি এখনও কোন অভিযোগ হাতে পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

 

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।