সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রামগড়ে আশ্রয়হীন প্রকল্পের আওতাধীন হয়ে গৃহহীন বৃদ্ধ

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বেলাল হোসাইন,খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়ির রামগড়ে বাস্তবায়নাধীন দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পে নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।ঘর নির্মানে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীকে মারধর এবং বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দীন এর বিরুদ্ধে।সরকার হতদরিদ্র গৃহহীনদের আশ্রয়স্থল হিসেবে বিনামূল্যে বাসগৃহ হস্তান্তরের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের টিআর/কাবিটা কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে রামগড় উপজেলার ২নং পাতাছড়া ইউনিয়নে এ প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ২৪টি এ ধরনের আধাপাকা বাসগৃহ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়। এসব ঘর নির্মাণে প্রতিটির জন্য ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হয় ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এতে দুটি থাকার ঘর, একটি রান্না ঘর ও একটি টয়লেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসব হতদরিদ্র পরিবারের এক খণ্ড জায়গা রয়েছে অথচ ঘর তৈরির সামর্থ্য নেই তেমন পরিবারদেরই এসব ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এর তত্ত্বাবধানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউপি চেয়ারম্যানকে সভাপতি ও ইউপি সদস্যদের সদস্য করে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়।

 

ওই কমিটির মাধ্যমে এসব বাসগৃহের সুবিধা ভোগী নির্বাচন এবং তাদের কাছে ঘর হস্তান্তরের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে।কাজ সম্পূর্ণ না করে বিল তুলে নেয়ার অভিযোগ এবং কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় মারধরের স্বীকার হওয়া ভুক্তভোগী রামগড় পাতাছড়া ২নং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সরকারী অর্থায়নে তার নিজস্ব জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের টিআর/কাবিটা কর্মসূচির মাধ্যমে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয় এবং ঘরটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য মো:মহিউদ্দীন কে দায়িত্ব দেওয়া হয়।ঘর নির্মাণে নানারকম অনিয়মের প্রতিবাদ করায় দায়িত্বরত মেম্বার মোহাম্মদ মহিউদ্দীন তাকে বিভিন্নভাবে গাল মন্দ এবং প্রাণ নাশের হুমকি দেন। তখন তিনি বিষয়টি সাবেক উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা উম্মে ইশরাত এবং ২নং পাতাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরাকে অবহিত করেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার নির্দেশে মোহাম্মদ মহিউদ্দীন তাড়াহুড়ো করে নিম্ন মানের কাঠ,টিন এবং পরিত্যক্ত ইট দিয়ে কোনরকম ঘরের দরজা-জানালা এবং মেঝে ফ্লোর করে দেন।ঘর নির্মাণে সরকারি কোন নকশা অনুসরন করা হয়নি।যার ফলে ঘরটি উঁচু-নিচু অবস্থায় রয়েছে।ফ্লোর করার কয়েকদিন পর ঘরের মেঝে ফেটে মাটি বের হয়ে আসে।

 

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন,ঘর সম্পূর্ণ নির্মাণ না করে প্রকল্পের অন্য ঘরের ছবি দেখিয়ে বিল তুলে নেয়ার বিষয়টি মোহাম্মদ মহিউদ্দীন মেম্বার কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সামনে মারধর করে পরিষদ থেকে বের করে দেন।তার জন্য বরাদ্দকৃত ঘরে তাকে প্রবেশ করলে প্রাণে মেরে ফেলে দিবেন বলে হুমকি দেয়।যার কারণে তিনি নিজ বাড়িতে না গিয়ে আত্মীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।তিনি আক্ষেপ করে বলেন এই ঘরই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।গৃহহীন প্রকল্পের আওতায় এসে তিনি সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। এবিষয়ে ইউপি সদস্য মো:মহিনউদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন।নির্মান কাজ শেষ না করে, কি ভাবে বিল তোলা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিদি সদুত্তর দেন নাই। ঘর নির্মানে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মনিন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত রয়েছেন।সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীনকে ত্রুটিপূর্ণ কাজটি সম্পূর্ণ করে ঘর বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।তবে তার সামনে ভুক্তভোগী তোফাজ্জেল হোসেন কে মহিউদ্দীন মেম্বারের মারধরের বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনসুর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এই প্রকল্পের কাজ গুলো তিনি যোগদানের পূর্বে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যার কারণে তিনি এসবে অবগত ছিলেন না।যদিও এখন এসব প্রকল্পে বিভিন্ন অনিয়মের খবর এসেছে।ভুক্তভোগী তোফাজ্জেল হোসেনের কাজটি কেন হয়নি তা চেয়ারম্যান ও দায়িত্ব প্রাপ্ত মেম্বারকে চিঠির মাধ্যমে ডাকা হবে এবং তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)ও সহকারি কমিশনার( ভুমি)সজিব কান্তি রুদ্র বলেন,অনিয়মের খবর পেয়ে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে তিনি তার প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।