বৃহস্পতিবার , ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

তালিকায় টিনসেট স্কুল : বাস্তবে নেই,বরিশালে ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল সংস্কারে অর্থ বরাদ্দে অনিয়ম

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
সম্প্রতি সময়ের ঘূর্নিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাধারণ (ক্ষুদ্র) মেরামত-সংস্কারে অর্থ বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে নামেমাত্র স্কুল মেরামত করা হয়েছে। বরাদ্দের তালিকায় কয়েকটি স্কুলে টিনসেড ভবন ক্ষতিগ্রস্তের কথা উল্লেখ করা হলেও সরেজমিনে কোন টিনসেড স্কুল ভবন পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটের আওতায় ঘূর্নিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরন করা হয়। সে অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য উপজেলার ২৩টি বিদ্যালয়ের প্রতিটির অনুকূলে দেড় লাখ টাকা করে মোট ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।

ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় থাকা উপজেলার বেজগাতী মৈস্তারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে দুইটি পাকাভবন। এরমধ্যে কোনটিই ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। অথচ সরকারী টাকা বরাদ্দের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওই স্কুলটিকে আমফানের ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রেখেছে। এমনকি ওই বিদ্যালয়ে কোন টিনের ঘর না থাকা সত্বেও প্রতিবেদনে একটি টিনের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিদ্যালয়ের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন কাজ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক কল্পনা রানী জানান, বিদ্যালয়টি পূর্বে টিনসেড ছিলো। ২০১৭ সালে ভবন হয়েছে। তিনি আরও জানান, বরাদ্দকৃত টাকা এখনও উত্তোলণ করা হয়নি। কমিটি না থাকায় কাজ করা হয়নি। তবে নতুন করে একটি টিনসেড ঘর উত্তোলণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

একইভাবে উপজেলার ইল্লা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেড ভবন ক্ষতিগ্রস্তের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলেও সেখানে কোন টিনসেড ভবন পাওয়া যায়নি। সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘূর্নিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় থাকা কসবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, টরকীর চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে নাম সর্বস্ব কাজ করে পুরো টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষকরা জানান, মূলত উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যেসব বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকদের সু-সম্পর্ক রয়েছে সেসব স্কুল আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এমনকি অনেক স্কুলে একইসাথে দুইটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, ওইসব স্কুলের নামে বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আতাত করে প্রধানশিক্ষকরা উত্তোলন করে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

অপরদিকে চলতি বছর নিয়োগ পাওয়া নতুন শিক্ষকদের বেতন ভাতা করে দেয়ার নামে উপজেলা শিক্ষা অফিসার একাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে দুই হাজার পাঁচশ’ টাকা করে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজের অফিসের সামনে “আমার অফিস দূর্নিতী মুক্ত” সাইনবোর্ড লাগিয়ে মহাদাপটে দুর্নীতি মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ায় ভুক্তভোগিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দুদক কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস পূর্বে একযোগে ২৪টি বিদ্যালয় বন্ধ করে বনভোজনে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরেছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সল জামিল। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সল জামিল বলেন, যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করার পর সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার প্রত্যয়ন করার পরেই প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে বিল দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বিল করার নামে কারও কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে বিভাগীয় প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক এসএম ফারুক বলেন, এসব বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।