শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

যে কারণে টেকনাফ থানার ওসি আবুল ফয়সলকে ১১ দিন না পেরো’তেই সরানো হয়

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০

মোহাম্মদ জিয়া কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধ:

টেকনাফ থানার আলোচিত সাবেক বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের গোপন খবর ফাস হয়ে যাওয়ার ভয়ে গত ৩১ জুলাই টেকনাফ থানার অর্ন্তগত বাহারছরা পুলিশ তদন্ত চৌকির সামনে ওসি প্রদীপের

গত ৩১ জুলাই খুন হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান। ৩১ জুলাই পরবর্তী বহুকিছু হয়েছে। সিনহা হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া বিপদগামী কতিপয় পুলিশ সদস্যদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মেজর সিনহার হত্যা মামলা তদন্তে অগ্রগতির লক্ষ্যে কক্সবাজার টেকনাফ মডেল থানার সিসি টিভি ফুটেজকে মামলার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মনে করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। ৩১ জুলাই ও তার পরবর্তী সময়ের টেকনাফ মডেল থানার সিসিটিভি ফুটেজ মামলার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে মনে করেন।

তদন্ত কাজের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় মনে করা টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের অবস্থানকালীন ও ৩১ জুলাইয়ের আগের ও সিনহা হত্যাকান্ডের পরের ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার জন্যে আদালতে আবেদনও করেন। আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ফুটেজ সংগ্রহের অনুমতি দিলে গত ১৮ আগস্ট টেকনাফ মডেল থানার বিদায়ী ওসি মুহাম্মদ আবুল ফয়সলের কাছে যান।সদ্য বিদায়ী ওসি আবুল ফয়সাল তদন্ত কর্মকর্তা আইও মুহাম্মদ খায়রুল ইসলামকে জানান।

সিসিটিভির রেকড সিষ্টেম নষ্ট থাকায় সিসিটিভির ফুটেজগুলো দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সিসিটিভির ফুটেজগুলো দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে এ মর্মে লিখিত প্রদিবেদন নিয়ে মামলার আইও র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম টেকনাফ মডেল থানা থেকে বিষন্ন মনে ফিরে যান।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় সবাই, ডিজিটালাইশনের প্রতিবিম্বে দাড়িয়ে কিভাবে মডেল থানার খ্যাতি ছড়ানো, তকমা সম্বলিত মডেল থানার সিসিটিভির রেকডিং সিস্টেম কেন নষ্ট ছিলো? এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো কারও কাছে নেই।

হয়তো সিসিটিভি ফুটেজে মেজর সিনহা হত্যার স্পর্শকাতর ভিডিও ধারণ থাকায় রেকর্ডকৃত ফুটেজগুলো সরিয়ে সিসিটিভির রেকডিং সিস্টেম বিকল দেখানো হয়েছে।

তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিসিটিভির ফুটেজ গায়েবের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আদালতকে জানান।
অপরদিকে, গত ৫ আগস্ট’২০২০ বুধবার প্রদীপ কুমার দাশকে প্রত্যাহার করে ওই দিনই একই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এপিএম শমসুদ্দোহাকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এপিএম দোহার দায়িত্ব পালনের ৪দিন না পেরুতেই (৯আগষ্ট) রবিবার তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ অফিস ডিআইজি কার্যালয়ের এক জরুরী আদেশে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে ৯ আগষ্ট রবিবার কুমিল্লার চান্দিনা থানার ওসি মুহাম্মদ আবুল ফয়সলকে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্থলাভিষিক্ত হয়ে টেকনাফ মডেল থানার নতুন ওসি হিসাবে যোগদান করেন। যোগদানের ১২ দিন না যেতেই গত ২০ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২ এর সহকারি মহাপুলিশ পরিদর্শক আবদুল্লাহিল বাকির স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ প্রত্যাহার আদেশ জানানো হয়।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল ফয়সলকেও প্রত্যাহার করে এপিবিএনে(আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) বদলি করা হয়। তবে একই দিনে কক্সবাজার সদর থানার সদ্য নিয়োগকৃত সদর থানার ওসি খায়রুজ্জামানকে ৪ সদর থানায় যোগদানের ৪দিন না পে’রোতেই তাকে শিল্প পুলিশে বদলি করা হয়।

ফুটেজ গায়েবের পর ২য় অভিযোগ : টেকনাফের ২য় আলোচিত ওসি আবুল ফয়সল গত ১১ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে মেজর সিনহার হত্যার ঘটনাস্থল পুলিশ চেক পোষ্টের পার্শ্ববর্তী গ্রাম টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবনিয়ার মুহাম্মদ নুরুল আমিনকে মেজর রাশেদ মুহাম্মদ সিনহা হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে টেকনাফ থানা পুলিশে ধৃত করা হয়। ওইদিন তার বৃদ্ধ মাতা খালেদা বেগমকে জোরপূর্বক টেকনাফ মডেল থানায় হাজির করে কয়েকটি সাদা কাগজে টিপসই নিয়ে ওই কাগজে থানা কতৃপক্ষ ইচ্ছেমত বিবরণ লিখে নবাগত ওসি আবুল ফয়সল নুরুল আমীনের মা খালেদা বেগমকে বাদী করে একটি অপহরণ মামল দায়ের করে। টেকনাফ থানা মামলা নম্বর ১৯/২০২০ ইংরেজি। মামলার কোন বিষয়ে বৃদ্ধ খালেদা কিছুই জানেন না। তবে এ মামলায় খালেদার বক্তব্য লিখা হয়েছে গত ১০ আগস্ট সোমবার তার ছেলেকে অপরিচিত কিছু যুবক তার ছেলে নুরুল আমীনকে তার বাড়ি তুলে নিয়ে আসার অভিযোগ নিয়ে
অথচ একইদিনে ধৃত বাহারছড়ার মরিশবনিয়ার নুরুল আমিনকে সিনহা মু. রাশেদ হত্যা মামলার আসামি হিসাবে মামলার আইও র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম আদালতে তাকে হাজির করেন। যা একটি প্রকাশ্য বিষয়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ মডেল থানার সদ্য বিদায়ী ওসি সিনহা মু. রাশেদ হত্যা মামলার আসামি নুরুল আমিন এর মাকে বাদী দেখিয়ে নিজ ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অহেতুক মামলা, সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবের কারণে যোগদানের ১১ দিনের মধ্যে বদলি করা হয়েছে।

গত ২০ আগষ্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২ এর সহকারি মহাপুলিশ পরিদর্শক আবদুল্লাহিল বাকির স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ প্রত্যাহার আদেশে তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান (এপিবিএন) এ সংযুক্ত করা হয়েছে।

একই সাথে টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম শমসুদ্দোহাকে নতুন ওসি নিয়োগ না দেওয়ার আগ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত ওসির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সদ্য বিদায়ী আবুল ফয়সল টেকনাফে যোগদানের আগে কুমিল্লা চান্দিনা থানার ওসি ছিলেন।

গত মাসের ৩১ জুলাই শুক্রবার অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বিপদগামী পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর একমাত্র বড়বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদাউস গত ৫ই আগস্ট বুধবার বাদী হয়ে কক্সবাজারে এসে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (৩-নং আদালত)তথা টেকনাফ উপজেলা আদালতে তার ছোট ভাইয়ের হত্যা মামলাটি রুজু করেন।

এছাড়া মামলার আরেকটি অগ্রগতি হচ্ছে কারাগারে থাকা অর্মড পুলিশের ৩ সদস্যকে মেজর সিনহা হত্যা মামলায় তদন্তকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৭ দিনের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। র‌্যাবকে দেওয়া আর্মড পুলিশের তথ্যের সত্যতা যাছায়ের জন্য প্রদীপদের মুখোমুখি করা হবে আজ।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।