সাতক্ষীরা সদর ভূমি অফিসের তদন্ত ও শুনানি প্রতিবেদনে দ্বিতীয় পক্ষের আইনগত অবস্থান স্পষ্টভাবে উঠে আসার পর সরকারি কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফারুক নামে এক কুখ্যাত ভূমি দখলদারের বিরুদ্ধে।
সরকারি আদেশ নামা অনুযায়ী, নির্ধারিত দিনে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং সংশ্লিষ্ট জমির রেকর্ডপত্র যাচাই করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের এক অনুচ্ছেদে সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছে।অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট রেকর্ড রেজিস্টারসহ কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ, শুনানি ও পক্ষদ্বয়ের নোটিশ দ্বারা অবগত করিয়া মামলাভুক্ত তফসিলি সম্পত্তি ৩০নভেম্বর বেলা ১২ টার সময় সরেজমিনে তদন্ত করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়“দলিল, খতিয়ান ও রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায় যে মামলাভুক্ত জমি দ্বিতীয় পক্ষের দাবির পক্ষে রেকর্ডভুক্ত রয়েছে এবং উক্ত সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান আছে।
প্রতিবেদনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে উল্লেখ রয়েছে“উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ ও দাখিলকৃত কাগজাদি যাচাই করে দেখা যায় যে, উক্ত জমির মালিকানা ও দখল সংক্রান্ত বিষয় আদালতের বিচারাধীন থাকায় ভূমি অফিস আইনগতভাবে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য।
এই তদন্ত ও প্রতিবেদন দ্বিতীয় পক্ষের অনুকূলে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ফারুক। প্রত্যক্ষদর্শী ও অফিস সূত্র জানায়, তিনি সদর ভূমি অফিসেই নায়েব শর্মিষ্ঠা সরকারকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন“জমি আমার দখলে, তবুও কেন আমার বিপক্ষে রিপোর্ট দেওয়া হলো?
তদন্ত রিপোর্টে কোথাও ফারুকের পক্ষে বৈধ মালিকানা বা আদালতের কোনো স্থগিতাদেশের উল্লেখ নেই। বরং এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলছেন, ফারুক দীর্ঘদিন ধরে জোরজবরদস্তি ও প্রভাব খাটিয়ে মানুষের জমি দখল করে আসছেন।
স্থানীয়দের ভাষায়, “ফারুক একজন ভূমিদস্যু, এই এলাকার জমি লুটের মূল শয়তান।
সরকারি তদন্ত রিপোর্ট উপেক্ষা করে একজন সরকারি কর্মচারীকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ভূমি অফিসে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল বলছেন, এটি শুধু একজন নায়েবের ওপর হামলা নয় বরং ভূমি প্রশাসন ও আইনের শাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ ফারুকের বিরুদ্ধে দ্রুত ফৌজদারি মামলা গ্রহণ, তদন্ত রিপোর্টের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা এবং ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
নাগরিক নেতা আমিনুর রহমান বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা সঠিক রিপোর্ট দিলে যদি ভূমিদস্যুরা হুমকি দেয় তাহলে সরকারি অফিস আদালতে কাজ হবে কিভাবে। বিষয় টি নজরে ভূমিদস্যু ফারুকের বিষয়ে প্রশাসনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। ভূৃমিদস্যু ফারুকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি যাহাতে কেউ আর কোন কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার সাহস না পায়।
সরকারি কর্মকর্তাকে হুমকির বিষয়ে ভূমিদস্যু ফারুককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।