যশোরের অভয়নগরে কয়েকদিন ধরে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ভোর ও গভীর রাতে ঘন কুয়াশা পড়ায় সড়কে দৃশ্যমানতা কমে যাচ্ছে, ফলে যানবাহন চলাচল ধীরগতির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দিনমজুর, ভ্যানচালক, খেটে-খাওয়া মানুষ এবং বৃদ্ধ–শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সকাল ৯টার আগ পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মিলায় বাজার-ঘাট, চা-স্টল ও কর্মস্থলগুলোতে মানুষের উপস্থিতি অন্য সময়ের তুলনায় কম। কৃষকেরা শীতের কারণে নিয়মিত ক্ষেতে কাজ করতে না পারায় দৈনিক আয়ে টান পড়ছে। অনেক পরিবার গরম কাপড়ের অভাবে খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছেন। নওয়াপাড়া পৌর এলাকার বাসিন্দা একজন শ্রমিক বলেন, ভোরে কাজে বের হওয়া যায় না। শীতে কাজও কম, আয়ও কমে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, শীতজনিত ঠাণ্ডা-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা গত কয়েক দিনে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ,অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় বাইরে গেলে মাথা, কান ও পা ঢেকে রাখা, উষ্ণ পোশাক ব্যবহার করা এবং সম্ভব হলে গরম পানি পান করা জরুরি। এদিকে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলো। তারা বলছে, মাঠে-ঘাটে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষের পাশে এখনই দাঁড়ানো প্রয়োজন।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে ত্রাণ ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। একই সঙ্গে হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা হালনাগাদ করার কাজ চলছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, রাতের তাপমাত্রা আরও এক-দু’দিন কম থাকতে পারে। তবে সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে পারে এবং আবহাওয়া স্বাভাবিকের দিকে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।