পাবনা র ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ভয়ঙ্কর সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রাত আনুমানিক দু’টার দিকে একটি স্পিডবোটে করে ১২-১৫ জনের একটি ডাকাত দল বাজারে নামে। তারা প্রথমে বাজারের দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে রাখে। এরপর সরাসরি ব্যবসায়ীদের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে লুটপাট চালায়। ডাকাতরা দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার অভিযানে পাঁচটি সোনার দোকান এবং তিন ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আত্তাব জুয়েলার্সের মালিক আত্তাব হোসেনের বাড়ি থেকে নগদ ৪০ লাখ টাকা ও প্রচুর স্বর্ণালংকার লুট হয়েছে। তপন জুয়েলার্সের মালিক তপন কর্মকারের বাড়ি থেকে ৪২ লাখ টাকা এবং স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে। রতন জুয়েলার্সের মালিক রতন কর্মকার ও তার পরিবারকে মারধর করে ৪৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও উত্তম কর্মকার ও ইউসুফ আলীর জুয়েলার্স দোকানে এ সময় ডাকাতি করে।
রতন কর্মকার জানান, ডাকাতেরা বাড়িতে ঢুকলে আমি তিন তলায় গিয়ে প্রতিবেশীদের ফোন করার চেষ্টা করি, কিন্তু কেউ সাহায্য করতে আসেননি। পরে দীপকে ফোন করি, কিন্তু সে বের হতে পারেনি, কারণ তার ঘরের সামনে দুই অস্ত্রধারী দাঁড়িয়ে ছিল।
রতন কর্মকারের ছেলে রঞ্জন কর্মকার বলেন, দুর্বৃত্তরা প্রথমে দোকানের তালা ভেঙ্গে স্বর্ণালংকার লুট করে। এরপর বাড়িতে প্রবেশ করে আমার মা ও আমাকে মারপিট করে। দশ ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ ১৫ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। দু’জনের হাতে দুটি বন্দুক এবং ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে। ডাকাতরা লুটপাট শেষে ভোর সাড়ে চারটার দিকে আবার স্পিডবোটে করে গুমানী নদীর ভাটির দিকে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে অতিঃ পুলিশ সুপার (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া) সার্কেল আবু বকর সিদ্দিক, পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম ও একটি টিম ও ভাঙ্গুড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা এখনও জানা যায়নি। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পাবনা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের।আমরা তৎপর রয়েছি খুব দ্রুত সময়ে এই ডাকাতীর রহস্য উদঘাটন পূর্বক অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।
অতিঃ পুলিশ সুপার (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া) সার্কেল আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আইনগত প্রক্রিয় চলমান। তদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।