পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল মিশিয়ে নকল দুধ তৈরির অভিযোগে মো. মিজান আলী (২৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে ৯০ দিনের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে অষ্টমনিষা ইউনিয়নের শাহানগর পাঁচপাড়া গ্রামে এ অভিযান চালানো হয়। মিজান আলী ভাঙ্গুড়া সদর ইউনিয়নের মেন্দা পশ্চিম পাড়ার মৃত. গোলাম মোস্তফার ছেলে ও চিহ্নিত নকল দুধ ব্যবসায়ী।
স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসন জানায়, ননী ও ফ্যাট তুলে নেওয়া পাতলা দুধ বা পানি মিশিয়ে তাতে যোগ করা হতো সয়াবিন তেল, গ্লুকোজ, স্যাকারিন, ইউরিয়া, ডিটারজেন্ট পাউডার, কস্টিক সোডা ও অজ্ঞাত উৎসের রাসায়নিক জেলি। এসব কেমিক্যাল ব্লেন্ডারে মিশিয়েই কয়েক মিনিটে তৈরি করা হতো নকল দুধ, যা ভোক্তাদের কাছে সাধারণ দুধ হিসেবে বিক্রি করা হতো। এ ধরনের দূষিত দুধ দীর্ঘমেয়াদে কিডনি, লিভার ও পাচনতন্ত্রসহ মানবদেহের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে।
স্থানীয়রা জানান, এ কারখানার কারণে এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। তারা অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করে মূল হোতা ফারুকসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।
অভিযান পরিচালনাকালে ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল থেকে কেমিক্যাল মেশানো প্রায় ১০ লিটার তেল ও প্রস্তুত ৮ লিটার নকল দুধ জব্দ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯–এর ৫২ ধারায় তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মিজান আলী স্বীকার করেন, তিনি তার ভাই ফারুক হোসেনের সঙ্গে যৌথভাবে এ অবৈধ ব্যবসাটি চালাচ্ছিলেন। ফারুক পূর্ব থেকেই এলাকায় ‘নকল দুধ ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত বলে জানান তিনি।
অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ অফিসার আশরাফুল আলম ও ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সদস্যরা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, মানুষের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে খাদ্যে ভেজাল উৎপাদনকারীদের কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুধসহ সব ধরনের ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।