পাবনার চাটমোহর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মুনতাজ আহমেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি ও জলাশয় দখলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের একাংশ।
রবিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, শ্রমিক দলের সভাপতি পরিচয় ব্যবহার করে মুনতাজ আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, এলাকায় সালিশের নামে অর্থ আদায়, জমি ও জলাশয় দখল, থানায় দালালি এবং নিজ দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও মত দেন তারা।
বক্তারা আরও বলেন, বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর থেকে মূলগ্রাম ইউনিয়নসহ উপজেলা বিএনপি সংগঠন কার্যক্রমে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, তার অপকর্মে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক নেতাকর্মী দলীয় কর্মসূচি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। দ্রুত দলীয় শৃঙ্খলার স্বার্থে মুনতাজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তাঁরা। সমাবেশ থেকে মূলগ্রাম ইউনিয়নে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়।
মূলগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মহব্বত মল্লিক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মুনতাজ বিএনপির নাম ব্যবহার করে চাঁদা আদায় ও ভুক্তভোগীদের ওপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। অমৃত কুণ্ডা হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, রেলবাজার এলাকায় শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া এবং আপত্তি জানালে ব্যবসায়ীদের ঘরবাড়িতে হামলা করা—এসব অভিযোগ এলাকাবাসীর মুখে মুখে। এসব কারণে অনেকেই দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “৯ নভেম্বর রেলবাজারে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত জহুরুল স্বাভাবিকভাবে টোল তুলছিলেন। তখন মুনতাজ তার লোকজন নিয়ে গিয়ে টোল উত্তোলন বন্ধ করে দেয় এবং টাকা তাদের মাধ্যমে নিতে নির্দেশ দেয়। বিষয়টি পরিকল্পিত আধিপত্য বিস্তারের অংশ।”
অভিযোগের বিষয়ে শ্রমিকদল সভাপতি মুনতাজ আহমেদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং কিছু ব্যক্তি অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন ট্রাক ও যানবাহন থেকে টাকা নিচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর আমি তাদের নিষেধ করেছি। এ কারণে তারাই ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ইজারা নেওয়া হাটের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের একটি মহল পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”