যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ীরা আজ রাস্তায় নেমেছেন একটাই দাবিতে “দুর্নীতির বিচার চাই, নির্দোষদের হয়রানি নয়।” ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র নওয়াপাড়া শাখার তিন সাবেক কর্মকর্তা মোস্তফা মেহেদী হোসাইন চৌধুরী, সাফারুল ইসলাম ও আব্দুল হান্নান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ব্যক্তিগত স্বার্থে কোটি টাকার অনৈতিক লেনদেন করে পরে দায় চাপিয়েছেন সৎ ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই তিন কর্মকর্তা ব্যাংকের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নানা অবৈধ লেনদেনে জড়িত ছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ পেলে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে স্থানীয় নির্দোষ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুদক দিয়ে মিথ্যা মামলা করান। এতে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের জন্ম নেয়। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ওই কর্মকর্তারা দেশি-বিদেশি কিছু অসাধু চক্রের সঙ্গে যুক্ত, যারা দেশের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করতে ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এমনকি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া এক প্রতারক ব্যবসায়ীও এই চক্রের মূল হোতা বলে দাবি ওঠে। বক্তারা বলেন, আমরা সৎভাবে ব্যবসা করি, অথচ দুর্নীতিবাজদের ষড়যন্ত্রে আমাদের নাম জড়ানো হচ্ছে। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আজ নওয়াপাড়ার রাস্তায় নেমেছি বিবেকের তাড়নায়। তারা আরও জানান, করোনা-পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা আর ডলার রেট বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ওই কর্মকর্তারা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন এবং শেষ পর্যন্ত সেই হুমকি বাস্তবায়ন করেন। ব্যবসায়ীরা ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, নিরপেক্ষ তদন্ত করুন, প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করুন। সৎ ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ না হলে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ের সামনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তারা সতর্ক করে বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি করে রক্ষা করার চেষ্টা করা হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করেন স্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, এ লড়াই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয় এটি ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থানের লড়াই।
ব্যবসায়ীরা শেষ পর্যন্ত ঘোষণা দেন, আমরা ইসলামী ব্যাংকের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে চাই প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে। নোয়াপাড়াকে আর কোনো ষড়যন্ত্রের হাতে তুলে দেব না।
প্রশাসন ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা জানান, প্রয়োজনে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে তবে তা হবে আইনসম্মত ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে।