ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা জ্ঞান ও শিক্ষাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। কুরআনের প্রথম শব্দই হলো “اقرأ” — অর্থাৎ “পড়ো”। আল্লাহ তাআলা মানুষকে জ্ঞানের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
“তিনি আদমকে সব কিছুর নাম শিখালেন।” (সূরা আল-বাকারা: ৩১)
এই আয়াতের মধ্য দিয়েই বোঝা যায়—মানবজাতির আসল শক্তি হলো জ্ঞান। আর যিনি জ্ঞানের আলো ছড়ান, তিনিই প্রকৃত শিক্ষক। শিক্ষক—নবীদের উত্তরসূরি
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
“আলেমগণ নবীগণের উত্তরাধিকারী।” (আবু দাউদ)
নবীরা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে আহ্বান করেছেন। শিক্ষকরাও সেই একই কাজ করেন—তারা অজ্ঞতার জাল ছিন্ন করে সমাজকে আলোকিত করেন। তাই ইসলামে শিক্ষককে শুধু পেশাজীবী হিসেবে নয়, বরং সমাজের পথপ্রদর্শক হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা
ইসলাম শিক্ষকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিনয় প্রদর্শনের শিক্ষা দেয়। সাহাবায়ে কেরামরা তাদের উস্তাদের সামনে মাথা নত করে বসতেন। কেউ কেউ বলতেন,
“আমি আমার শিক্ষকের সামনে এমনভাবে বসি, যেন পাখি তার মাথায় বসতে পারে।”
একজন শিক্ষককে অসম্মান করা মানে জ্ঞানের অবমূল্যায়ন করা। আর জ্ঞানকে হালকা করা মানে আল্লাহর নেয়ামতকে অস্বীকার করা। শিক্ষকের দায়িত্ব
শিক্ষকের কাজ শুধু পাঠদান নয়; বরং নৈতিকতা, চরিত্র ও ঈমানের বিকাশ ঘটানো। একজন প্রকৃত শিক্ষক তার ছাত্রদের অন্তরে আল্লাহভীতি, মানবতা ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে নিজে শিখে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।” (বুখারী)
অতএব শিক্ষক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সমাজে জ্ঞানের আলো ও নৈতিকতার সুবাস ছড়ান।
একটি জাতির উন্নতির মূল চাবিকাঠি হলো তার শিক্ষকসমাজ। যারা শিক্ষকদের সম্মান করে, তাদের জাতি কখনো অন্ধকারে হারায় না।
কিন্তু আজকের বাস্তবতায় দেখা যায়—শিক্ষক অবমূল্যায়িত, অপমানিত, কখনও নির্যাতিতও হচ্ছেন। অথচ ইসলামী দৃষ্টিতে শিক্ষকের প্রতি অবহেলা করা মানে জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা।
তাই আমাদের উচিত শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শ