যশোরের অভয়নগরে বহুল আলোচিত নওয়াপাড়া পৌরসভা অভিভাবকহীন থাকায় চলছে বিভিন্ন অনিয়ম লুটপাট,দেখার কেউ নেই। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৫ আগষ্টে আ.লীগ সরকার পতন হওয়ার পর নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার পৌরসভা ছেড়ে পালিয়ে যায়। যে কারনে পৌরসভাটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেল নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে নওয়াপাড়া পৌরসভার কার্যক্রম চলমান থাকে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা প্রশাসনসহ নওয়াপাড়া পৌরসভার দায়িত্ব একক ভাবে পালন করা সহজ বিষয় নয়। ফলে নওয়াপাড়া পোরসভায় নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভিন্ন অনিয়ম লুটপাটে নেমে পড়েন। অনুসন্ধানে জানা গেছে অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঠিক মতো পৌরসভায় উপস্থিত থাকেননা। যে কারণে পৌরসভায় সেবাপ্রার্থীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। যেমন জন্ম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবা পেতে সাধারণ মানুষের দিনের পর দিন পৌরসভায় হাটতে হয়। তোবুও সেবাপ্রার্থীরা সঠিক সেবা থেকে চরম বঞ্চিত হচ্ছে। একটায় কারণ নওয়াপাড়া পৌরসভার অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্ব-স্ব দায়িত্ব চরম অবহেলার প্রতিফল সাধারণ মানুষের ভোগ করতে হয়। এবিষয়ে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান, নওয়াপাড়া পৌরসভায় কোন কাজ নিয়ে গেলেই মাস পার হয়ে যায়, কিন্তু কাজের কোন সমাধান তারা দিতে পারেনা। কিছু বলতে গেলেই তেড়ে আসে মারতে ও বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে আমরা সাধারণ মানুষ আমাদের এতো অনিয়ম দেখেও চুপ করে সবকিছু মেনে নেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকেনা। এতো গেল অনিয়মের কথা গত ৫ আগষ্টের পর নওয়াপাড়া পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা লুটপাট করে চলেছে। সচিবের চলাচলের জন্য অধিকাংশ সময় পৌরসভার গাড়ি ব্যবহার করছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী। সুযোগ পেয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভাটি হরিলুটের একটি মাধ্যম হয়ে পড়েছে। সরে জমিনে দেখা যায় নওয়াপাড়া পৌরসভায় দায়িত্বরত অধিকাংশ কর্মকর্তা অফিস টাইমে অফিসে অনুপস্থিত রয়েছে। নিন্মশ্রেণীর কিছু কর্মচারী থাকলেও তাদের প্রশ্ন করলে সঠিক কোন উত্তর তারা দিতে পারেনা। উল্লেখ নওয়াপাড়া পৌরসভায় টিআর (টেস্ট রিলিফ) বরাদ্দের অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, -২০২৪ ২০২৩োঅর্থ বছরে পৌরসভার বরাদ্দ পাওয়া টিআর ফান্ড থেকে উপজেলা পরিষদের অফিসার ক্লাবে একটি এসি বিতরণ করা হয়েছে। অথচ টিআর (টেস্ট রিলিফ) প্রকল্পের নীতিমালায় এ ধরণের ব্যয়ের কোনো বিধান নেই। বিতরণকৃত একটি এসির মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
টিআর বরাদ্দ সাধারণত জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করার কথা। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষুদ্র অবকাঠামো উন্নয়ন, সড়ক সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ কিংবা জরুরি সহায়তা প্রদানের জন্য এ বরাদ্দ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু নীতিমালা অমান্য করে অফিসার ক্লাবে এসি বিতরণের ঘটনায় ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, “টিআর ফান্ডের টাকা দিয়ে মানুষের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর কথা থাকলেও প্রভাবশালী মহল নিজের স্বার্থে তা ব্যবহার করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “অভিভাবকহীনভাবে চলছে এই পৌরসভা। ইউএনও স্যারও নেই, তাই কিছুটা উল্টাপাল্টা হচ্ছে। লোকজন যা ইচ্ছে তাই করছে।” জরুরি ভাবে নওয়াপাড়া পৌরসভার সকল অনিয়ম ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন সচেতন মহল।