বৃহস্পতিবার , ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২৬শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সরাতে ষড়যন্ত্র,শিক্ষা ব্যবস্থা বিঘ্নিত

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি শিক্ষক গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অভিযোগ উঠেছে, এই শিক্ষকরা পূর্ববর্তী প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছত্রছায়ায় কোচিং বাণিজ্য চালাতেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ানো এবং পাঠদানে শিক্ষকদের বাধ্য করায় এই চক্রটি তাকে সরাতে ষড়যন্ত্র করছেন।
জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। এর ফলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যেমন বেড়েছে, তেমনি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান শুরু করেছেন। কিন্তু এই পরিবর্তনকে ভালোভাবে নেননি কিছু শিক্ষক। সম্প্রতি তিনি মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর বিদ্যালয়ে অডিট চেয়ে একটি আবেদন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে, বিগত প্রধান শিক্ষক এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন ০৭-০৭-২০১২ সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করে ১২-০৬-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় তিনি জেলা শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ একসাথে তিনটি দায়িত্ব পালন করেন। নিয়োগ বাণিজ্য করে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
ফলে সাতক্ষীরা শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। এই নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন মোহাম্মাদ হাবিবুল্লাহ সিনিয়র শিক্ষক, মো. মমতাজ হোসেন সিনিয়র শিক্ষক, মোস্তফা মনিরুজ্জামান সহকারী শিক্ষক, মো. খোরশেদ আলম সিনিয়র শিক্ষকসহ আরও অনেকে। উক্ত শিক্ষকরা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ব্যাচ করে নিজ বাসা ও ভাড়া বাসায় পড়াচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তাদের এই ব্যাচ পড়ানো প্রায় বন্ধের পথে।
এজন্য তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সূত্র আরও জানায়, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন অবস্থায় এসএম আব্দুল আল মামুন বিভিন্ন ফান্ডের টাকা নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে আত্মসাৎ করেন। তার অপকর্মের সঙ্গে উক্ত শিক্ষকরা সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন অডিট চাওয়ায় মো. আলাউদ্দিনকে বদলি করাতে উঠে পড়ে লেগেছেন চক্রটি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, মমতাজ হোসেন, মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, মো. খোরশেদ আলম, মোস্তফা মনিরুজ্জামান, মো. মনিরুজ্জামান এবং জান্নাতুল ফেরদৌসসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।
এই শিক্ষকরা সম্প্রতি বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি গোপন বৈঠক করেন। সেখানে তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বদলি এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করার পরিকল্পনা করেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে অর্থ আত্মসাৎ, ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি এবং অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ  দায়ের করেছেন।
জেলা প্রশাসন এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে বলে জানা গেছে। তবে, অভিযুক্ত শিক্ষকরা নানাভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বিভিন্ন মহলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছেন। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে এবং বিদ্যালয়কে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি যদি অপরাধী হই তাহলে আমি অডিট চাইতে পারতাম না। আমি চাই তদন্ত হোক এবং সমস্ত অনিয়মের অভিযোগের জবাব দিতে আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমি মাত্র ৫ মাসের একটু বেশি সময় দায়িত্বভার পালন করছি। তবে, তিনি আরো বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছি এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের চেষ্টা করছি। বাকিটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে।”
এই পরিস্থিতিতে, জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই দ্বন্দ্বের সমাধান কঠিন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সচেতন মহল মনে করেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন এবং আগের প্রধান শিক্ষক এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুনের এর প্রায় ১২বছর কার্যকাল সময়কাল তদন্ত করা হোক। দ্রুত তদন্ত করে দোষী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ আবারও বিঘ্নিত হতে পারে সচেতন মহল মনে করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।