শনিবার , ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

৪০ বছর পর গ্রামীণ বাংলায় পুনর্জাগরণের উৎসব, চলনবিলে নৌকাবাইচ দেখতে লক্ষাধিক দর্শনার্থীর আগমন

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র নাটোরের গুরুদাসপুরে ‘জেলা প্রশাসন নৌকাবাইচ’ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে প্রায় লক্ষাধিক উৎসুক দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে। প্রতিযোগিতায় বৈঠার তালে নৌকা দুলিয়ে মাঝিদের গান আর শ্লোগান চলে। এসময় দর্শকদের করতালি, স্থানীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনা আরও বর্ণিল করে তোলে বিলের পরিবেশ। আনন্দে মেতে উঠেন উচ্ছসিত মানুষ। চারদশক পর যেন গ্রামীণ বাংলায় এক পুনর্জাগরণের উৎসবে মুখরিত হলো চলনবিল।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ‘নদী দূষণ রোধ করি, নির্মল বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যে বিলশা মা জননী সেতু থেকে তাড়াশের কুন্দইল বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার জলপথে ওই নৌকাবাইচের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান। বিশেষ অতিথি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. আজিম উদ্দিন, ডিআইজি মো. শাহজাহান আলী, নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, ইউএনও ফাহমিদা আফরোজ ছাড়াও সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়- প্রথম ধাপে নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার ২১টি বড়-মাঝারি নৌকা নিবন্ধিত হয়। সেখান থেকে বাছাই করা ১২টি নৌকা দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে প্রতিযোগিতা করে। প্রতিটি নৌকা রঙিন পতাকা ও নানাসাজে ঝলমল করছিল। সেতু ও বিলের পাড়জুড়ে এবং নৌকায় করে এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।
নৌকাবাইচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ‘নিউ একতা এক্সপ্রেস’ নৌকা। রানারআপ হয় ‘বাংলার বাঘ’ ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে ‘আল মদিনা’। বিজয়ীদের হাতে প্রথম পুরস্কার একটি মোটরসাইকেল, দ্বিতীয় পুরস্কার একটি রেফ্রিজারেটর ও তৃতীয় পুরস্কার এলইডি টেলিভিশন প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ।

প্রতিযোগিতার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন ইউএনও ফাহমিদা আফরোজ। তিনি গত তিনদিন ধরে এই নৌকাবাইচকে সফল ও সার্থক করতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। তাকে সহযোগিতায় ছিলেন গুরুদাসপুর থানার ওসি আসমাউল হক, এসিল্যান্ড আসাদুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী মিলন মিয়া, সমাজসেবা কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাংবাদিকরা।

নাটোর জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন- “দীর্ঘ ৪০ বছর পর চলনবিলের মূল পয়েন্টে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হলো। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র‌্যাব, সেনা সদস্য, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেছেন। তিন দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল।”

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ বলেন- “এবারের নৌকা বাইচ কেবল প্রতিযোগিতা নয়, এটি চলনবিলের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার এক মহৎ উদ্যোগ।”

প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য সচিব সাইদুর রহমান বলেন, “চলনবিলের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দীর্ঘ ৪০ বছর পর পুনর্জীবিত হলো। নৌকা বাইচ, শিক্ষা উৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসবÑ এসবের লক্ষ্য একটাই, নতুন প্রজন্মকে সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন নিয়ে প্রগতিশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। এ নৌকাবাইচ গ্রামীণ সংস্কৃতির পুনর্জাগরণের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।”

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।