শুক্রবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনে দেখা দিয়েছে ফাঁটল, স্বাস্থ্য সেবা ঝুকিপূর্ণ 

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৫

যশোরের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শিল্প-বাণিজ্য ও বন্দর নগরী নওয়াপাড়ার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত এ হাসপাতালটিতে অভয়নগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ যশোর সদর, নড়াইল, মণিরামপুর ও খুলনার ফুলতলা উপজেলার একাংশের রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। ফলে কেবল নওয়াপাড়া শহরের বিপুল জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা দিতে গলধঘর্ম হাসপাতালটিকে সারা বছর রোগীর ব্যাপক চাপ সামাল দিতে হয়। যে কারনে প্রায় দেড় যুগ আগে ৩৫ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। যা দেড় যুগ ধরে কেবল কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। দিন গেলেই হাসপাতালটিতে কেবল রোগীর চাপই বাড়ছে। কিন্তু বাড়েনি নূন্যতম সুযোগ-সুবিধা। উপরোন্ত অর্ধশত বছর আগে নির্মিত জরাজীর্ণ ভবনে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। প্রতিনিয়ত পলেস্তারা খসে পড়ছে রোগীদের বেডে। ইতিপূর্বেও পলেস্তারা খসে পড়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা যেমন চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে তেমনি ডাক্তার ও সেবিকারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা চলমান রেখেছেন। ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। তবুও চরম অবহেলিত এ হাসপাতালটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের এবং ১ শয্যায় উন্নীত করে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি বরাবরই ভুলন্ঠিত হচ্ছে। ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন চিকিৎসক ও রোগীরা। জানাগেছে, ১৯৭৫ সালে নির্মিত হাসপাতাল ভবনটি ১৯৭৮ সালে চিকিৎসা সেবায় যাত্রা শুরু করে। সরেজমিনে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মাথার উপরে ছাদের পলেস্তারা অসংখ্য জায়গায় খসে পড়েছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে বড় বড় ফাঁটল। সেবিকাদের অভ্যর্থনা কেন্দ্রে বসে আছেন তিনজন সেবিকা। তাদের মাথার উপরও পলেস্তারা খসে পড়া বিধ্বস্ত ছাদ। কোথাও ফাঁটল। শয্যা সংকটের হাসপাতালটিতে রোগীদের হাসপাতালের বেডে শয্যা স্থাপন করে ভর্তি করে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানকার ছাদের অবস্থা আরও বিধ্বস্ত। চিকিৎসকদের চেম্বারগুলোতে জোড়া-তালি দিয়ে ও চুনকাম করে ফাটলগুলো আড়াল করা হয়েছে। খোদ হাসপাতালের টিএইচও এর কক্ষটিও এই বিধ্বস্ত ভবনে। তবে তার ভবনটিতে টাইলস দিয়ে এবং রং-চং করে ভবনের পৌঢ়ত্ব্য ঢেকে দেয়া হয়েছে। এ যেন ষাটোর্ধ নারীকে পার্লারে ঘষে-মেজে যৌবণে ফেরানোর বৃথা চেষ্টা মাত্র। যশোর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস সুত্রে জানাগেছে, হাসপাতালের ভবনটির জরাজীর্ণ অবস্থার খবরে সম্প্রতি গত তারিখে হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি হাসপাতালটি পরিদর্শন করে উদ্বেগ প্রকাশ করে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন। এবং যত দ্রæত সম্ভব রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তরের অনুরোধ করেছেন। অন্যথায় বড়ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার শংকাও প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রকৌশল অফিস সূত্র আরও জানায়, অর্ধশত বছর আগে নির্মিত ভবনটির আয়ুষ্কাল ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। কমে গেছে রেইন ফোর্সমেন্টের স্ট্রেইনথ। ভবনটি এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপদ স্থানে হাসপাতালটির কার্যক্রম স্থানান্তর জরুরী। এদিকে হাসপাতাল রেজিস্টার সূত্রে জানাগেছে, হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৭০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয় সাড়ে ৫ শতাধিক রোগী। সীমীত জনবল দিয়ে হাসপাতালটিতে এত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। তবুও একঝাঁক তরুণ চিকিৎসকের উদ্যমের কারনে চিকিৎসা সেবা চলমান রাখা সম্ভব হয়েছে। হাসপাতালটির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য অসংখ্যবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও অদ্যবধি ৩১ শয্যার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চলতে হচ্ছে হাসপাতালটিকে। এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলিমুর রাজিব বলেন, আমি নিজেও রোগী ও চিকিৎসক-সেবিকাদের নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। এই মুহুর্তে ভবনটি থেকে স্বাস্থ্য সেবা সরিয়ে নেয়ারও কোন ব্যবস্থা নেই। অচিরেই হাসপাতালটিকে একশ’ শয্যায় উন্নীত করে সে অনুযায়ী নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। অন্যথায় জান মালের ক্ষতির আশংকাও করেন তিনি।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।