শনিবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

অভয়নগরে জামায়াত নেতার কান্ড, সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় জোর করে তালাক করানোর অভিযোগ 

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এক গর্ভবতী নারীকে জোর করে তালাকের কাগজে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ উঠেছে, এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ও ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে। তিনি অভয়নগর  উজেলার ৭নং শুভড়ারা ইউনিয়নের জামায়াত নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল ইসলাম। ‎এব্যাপারে ভুক্তোভুগি ওই নারী অভয়নগর প্রেসক্লাবে এক লিখিত সাংবাদিক সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে ভুক্তোভুগি ওই নারী বলেন, একই উপজেলার হিদিয়া শ্যামনগর গ্রামের মো. জাহিদুল মোল্ল্যার ছেলে মো. শফিকুর ইসলামের সাথে ১৭ মে ২০২৪ সালে আমাদের বিবাহ হয়। ‎আমার স্বামী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য যার বিপি নম্বর— ৯৫১৫১৭৬৩২১। আমি নিজেও একজন সরকারি চাকুরিজীবি। ‎‎বিবাহের কিছু দিন পরে বুঝতে পারি আমার স্বামী একাধিক নারীর সাথে পরকীয়ায় আসক্ত। বিষয়টি জেনে যাওয়ায় সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তুচ্ছ ঘটনায় আমাকে শারীরিক নির্যাতন করত। আমি সংসারের কথা চিন্তা করে চুপ করে সব মেনে নিয়ে সংসার করতে থাকি। ভেবে ছিলাম হয়তো একদিন ভালো হবে এই আশায়। নির্যাতন করার পরেও আমি যখন স্বামীর সংসার ত্যাগ করছিনা তখন সে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং বলে এই টাকা না দিলে আমার সাথে সে আর সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেন। ‎আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক তিনি এতো টাকা কি করে দেবে। এই কথা বলার পর সে ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় আমাকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে। ‎গত ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখে আমি কৌশলে গত ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ সেখান থেকে পালিয়ে আসি। এসময় আমি অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। ‎পরিবারের মানসন্মানের কথা ভেবে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করি নাই। সামাজিক ভাবে মিমাংসার জন্য শুভরাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। ‎‎আমি ওনার কথা মত গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখ শুভরাড়া ইউনিয়ন পরিষদে আপোষ মিমাংসার জন্য চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে ডাকেন। আমরা সেখানে উপস্থিত হই কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের কোন কথা না শুনে ছেলে পক্ষের একক কথা শুনে আমাকে তালাকের কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি স্বাক্ষর করবো না বললে চেয়ারম্যানসহ তার অনুশারী ও আমার স্বামীর পরিবারের লোকজন  আমাকে ও পরিবারে সকলকে হুমকি দিতে থাকে। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তার ও  ছেলে পক্ষের লোকজন আমাকে তালাকের কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। ‎ওই তালাকের কাগজে আমার স্বামীর স্বাক্ষর ২৫ তারিখ ছিল, আমাকে জোর করে ২৬ তারিখ স্বাক্ষর করানো হয়েছে। তারা আগেই সীদ্ধান্ত করে ছিলেন আমাদের চাপ দিয়ে স্বাক্ষর করাবেন। ‎‎এসময় আমি চেয়ারম্যান কে বলি আমি দু’মাসের গর্ভবতী তিনি আমার কথা কর্ণপাত করেনি। পরে গত ৩ মার্চ ২০২৫ তারিখ তার ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে একটি সালিশ নামা লিখে দেন। সেখানে উল্লেখ করা বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার পরে তালাক কার্যকর হবে। এই বিচার নিয়ে কোথাও কোন অভিযোগ করলে দেখে নেওয়ার হুমকিসহ জীবন নাশের হুমকি প্রদান করেন। ‎আমরা কোন উপায় না পেয়ে সেখান থেকে চলে আসি। সেখান থেকে আসার পরে আমি শারীরক ও মানুষিক ভাকে ভেঙ্গে পরি। কিছুটা সুস্থ্য হয়ে অভয়নগর থানা ও পুলিশ হেড কোয়াটারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও কোন সমাধান পেলাম না।

‎‎আমার বাচ্চা কোন পরিচয়ে পৃথিবীরতে বাঁচবে, কি অপরাধ অনাগত সন্তানের। আমরা দরিদ্র বলে এই অপরাধের বিচার পেলাম না এই কথা বলেতে বলতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন সেই নারী।

‎‎এর পেছনে সব কিছুর কলকাঠি নাড়াচ্ছে তার বোন ও বোন জামাই তিনি খুলনায় ডিবিতে কর্মরত  আছেন বলে জানান সেই ভুক্তভোগী নারী।

‎‎তিনি আরো বলেন আমার স্বামী আবার আমার অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এখন আমি সু—বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে চিন্তিত। ‎তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য প্রমান দিয়ে পুলিশ হেড কোয়াটারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। সেখান থেকে কোন সুরাহ পেলাম না। আমার স্বামীর পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অনুসারি। এখন ভোল পালটে বিএনপি পরিচয় দিয়ে চলছে। ‎‎ভুক্তভোগী নারী জানান, আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্টের সাথে যারাই যুক্ত আছে তাদের সকলের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

‎‎ঘটনার বিষয়ে শফিকুর ইসলাম বলেন, উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে আপস মীমাংসায় এই তালাকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এখানে কাউকে জোর করানো হয়নি। এখন কেনো সে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছে আমি বুঝতে পারছি না।

‎দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিয়ের কথা শিকার করেন। ‎এবিষয়ে শুভড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো জহুরুল ইসলাম বলেন, ওই নারী আমার পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেন। আমি নিয়ম অনুযায়ী উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সালিশের মাধ্যমে দু’পক্ষের সম্মতিতে তালাকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এখানে কাউকে জোর কারার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। ওই নারী গর্ভবতী এমন প্রশ্নে তিনি কোন উওর না দিয়ে  চুপ করে থাকেন।

‎‎পুলিশ হেড কোয়াটারে লিখিত অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো হাবিবুর রহমান জানান, পুলিশ হেড কোয়াটার থেকে এই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি আশা করি এ সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদ দিতে পারবো।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।