“পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি”— এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়া বৃক্ষমেলা এদিন সমাপ্ত হয়েছে।
“বাঁশের বন, গাছের বন—এই প্রাকৃতিক বনই পানির আঁধার।” — এমন মন্তব্য করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টায় সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার সমাপনী দিনে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, “প্রতিটি ফলদ গাছ শুধু পরিবারের পুষ্টির চাহিদাই পূরণ করে না, অনেক গাছ আবার ওষুধী গুণেও ভরপুর। বাঁশগাছ হচ্ছে প্রাকৃতিক পানির আঁধার। তাই বাঁশগাছ সংরক্ষণ করতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে যখন পানির সংকট দেখা দেয়, তখন এসব গাছই পানির উৎস ধরে রাখে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য জেলায় রিসোর্ট গড়ে তোলার জন্য শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়, অথচ বান্দরবান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপার ভাণ্ডার। এখানে পাহাড়, বন আর নির্মল প্রকৃতিই পর্যটকদের কাছে মূল আকর্ষণ।”
জেলা প্রশাসক পাহাড়ি অঞ্চলের সংকীর্ণ রাস্তার পাশে পরিকল্পিতভাবে গাছ রোপণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, “গাছ লাগালেই দায়িত্ব শেষ নয়, এগুলোর সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই বৃক্ষরোপণ অভিযান সফল হবে।”
তিনি বহুবর্ষজীবী ও দেশীয় প্রজাতির গাছের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক বন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট আর বর্ষায় বন্যা—এই দুই সমস্যার সমাধান একমাত্র বনায়নের মাধ্যমেই সম্ভব। এটি শুধু পরিবেশ রক্ষা করবে না, বরং সকলের কল্যাণও নিশ্চিত করবে।”
বক্তারা বলেন, “পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে হলে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বনায়নের কোনো বিকল্প নেই।”
জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ যৌথভাবে এ আয়োজনে সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (পাল্পউড প্লান্টেশন) মো. তহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এম.এম. শাহ নেয়াজ।
অনুষ্ঠান শেষে বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষমেলায় অংশগ্রহণকারী ও কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার, সার্টিফিকেট এবং গাছের চারা বিতরণ করা হয়।