দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয় অবশেষে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। দলীয় অবকাঠামোর প্রতি বছরের পর বছর উদাসীনতা ও অব্যবস্থাপনার চিত্র নিয়ে সম্প্রতি দেশ টিভিতে একটি প্রতিবেদন প্রচার হলে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, গত প্রায় দুই দশক ধরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ছিল ছেঁড়া ছাউনির নিচে ঝরে পড়া বৃষ্টির পানিতে সিক্ত এক ধ্বংসস্তূপ। দেয়ালে জমেছে ধুলোর স্তর, নেই দরজা কিংবা কোনো ব্যবহারের উপযোগী ব্যবস্থা। জাতীয় রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠা বিএনপি সারা দেশে সভা-সমাবেশ, ব্যানার-ফেস্টুনে সরব থাকলেও দৌলতপুরে দলীয় কার্যালয়টি হয়ে উঠেছিল এক প্রকার ভূতের বাড়ি। স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, এটি শুধু একটি অবহেলিত ভবন নয়, এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রতীক।
একজন স্থানীয় সিনিয়র নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হলেও আমাদের কার্যালয়ের এই অবস্থা সত্যিই লজ্জাজনক। এটা শুধু অবহেলা নয়, এটা আমাদের ব্যর্থতা।
নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, পদ-পদবি নিয়ে প্রতিযোগিতার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছিলো দলীয় ঘরের প্রতি ভালোবাসা। ব্যক্তিগত দোকান কিংবা বাসায় বসে বছরের পর বছর দলের কার্যক্রম চালাতে হয়েছে দলটির নেতাদের। অথচ সামান্য কিছু উদ্যোগেই কার্যালয়টিকে নতুন রূপে গড়া সম্ভব ছিল বলে মত অনেকের।
সাম্প্রতিক ফেসবুক সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর দলে যেন এক ধরনের আত্মসচেতনতা ফিরে এসেছে। শুরু হয়েছে কার্যালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ, টাঙানো হয়েছে নতুন সাইনবোর্ড, করা হচ্ছে সংস্কার। নেতাকর্মীদের ব্যবহারের উপযোগী করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এ কবির জিন্নাহ জানান, সম্প্রতি কিছু জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রচারের পরই আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। তখনই আমরা উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়টি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সাইনবোর্ডটিও নতুন টাঙানো হয়েছে। কার্যালয়টি একটি আধুনিক ও মডেল কার্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে।