সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আগৈলঝাড়ায় ৫’শ ২৬ বছরের ঐতিহাসিক বিজয় গুপ্ত’র মনসা মন্দিরে অনাড়ম্বরে দেবী মনসার বাৎসরিক পুঁজা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০২০

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
মধ্য যুগের অমর কাব্যগ্রন্থ “মনসা মঙ্গঁল” কাব্যর রচয়িতা ও বাংলা সাহিত্যের অমর কবি বিজয় গুপ্ত’র প্রতিষ্ঠিত “মনসাকুন্ড” খ্যাত বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত ৫’শ ২৬বছর বছরের প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী মনসা মন্দিরে দেবী মনসার বাৎসরিক পূঁজা কোন রকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া ধর্মীয় আচার আচরণের মধ্য দিয়ে সোমবার (১৭আগষ্ট) অনুষ্ঠিত হয়েছে। পঞ্জিকা মতে, প্রতিবছর বাংলা শ্রাবন মাসের শেষ দিনে বিষ হরি (বিষ হরণকারী) বা মনসা দেবীর পূঁজা ভারতীয় উপমহাদেশে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

বৈশ্বিক করোনা মোকাবেলায় অন্যান্য বছর মহা ধুমধামে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এবছর শুধু ধর্মীয় আচার বিধি মেনেই পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ¯^ল্প পরিসরে আগত ভক্তরা মা মনসার মন্দিরে তাদের মানত করা দুধ, কলা, ফল, মিষ্টি প্রদান করেছে।

ঐতিহাসিক মনসা মঙ্গল কাব্য মতে, ৫শ ২৬ বছর আগে মধ্য যুগে সুলতান হোসেন শাহ্র শাসনামলে ইংরেজী ১৪৯৪ সনে কবি বিজয় গুপ্ত দেবী মনসা কর্র্তৃক ¯^প্নে দেখে নিজ বাড়ির সু-বিশাল দীঘি থেকে পূঁজার একটি ঘট পেয়ে গৈলা গ্রামের নিজ বাড়িতে মনসা দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন পূজা অর্চণা শুরু করেন।

পরে দেবী মনসার আদেশে দিঘীর ঘাটের পাশ্ববর্তি একটি বকুল গাছের নীচে বসে স্বপ্নে আদিষ্ট হয়েই “মনসা মঙ্গল” কাব্য রচনা করেন বিজয়গুপ্ত। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক সুলতান হোসেন শাহ্র রাজত্বকালে ওই বছর বিজয় গুপ্ত মনসা মঙ্গঁল রচনা করে রাজ দরবারে “মহা কবি”র খেতাবে ভ‚ষিত হয়েছিলেন।

জনশ্রুতি রয়েছে, দেবী পদ্মা বা মনসা বিজয় গুপ্তের কাব্য রচনায় সন্তুস্ট হয়ে আশির্বাদ হিসেবে বিজয় গুপ্তকে ¯^প্নে বলেছিলেন “তুই নাম চাস, না কাজ চাস?” উত্তরে বিজয় গুপ্ত বলেছিলেন “আমি নাম চাই”। যে কারনে তার নাম বিশ্বেব্যাপি ছড়িয়ে পড়লেও তিনি দেহত্যাগ করেছেন উত্তরাধিকার বিহীন।

বিজয় গুপ্তর জন্ম তারিখ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে নির্নয় করা হলেও মৃত্যু কাল সম্পর্কে সঠিক কোন দিন তারিখ গবেষকেরা বলতে পারেন নি। তবে গবেষকদের ধারণা মতে, সম্ভবত ৭০ বছর বয়সে ১৫২০ খ্রিষ্টাব্দে কাশী ধামে বিজয় গুপ্ত দেহত্যাগ করেন।

বিজয় গুপ্তই সর্বপ্রথম তার রচিত মনসা মঙ্গল কাব্যে ইংরেজী দিন, তারিখ ও সনের লিপিবদ্ধ করেন। এর আগেও একাধিক পন্ডিত ও কবিরা মনসা মঙ্গল রচনা করেছিলেন। যার অন্যতম ছিলেন ময়মনসিংহ’র কানা হরি দত্ত। কিন্তু তাদের তুলনায় বিজয় গুপ্তর কাব্য নিরস হলেও নৃপতি তিলক’র (সুলতান হোসেন শাহ) গুনকীর্তন ও ইংরেজী দিন, তারিখ ও সনের লিপিবদ্ধ করার কারণে তিনিই হয়ে ওঠেন মনসা মঙ্গল কাব্য রচয়িতাদের মধ্যে অন্যতম। “মহা কবি” খেতাব পাওয়ার পর সমগ্র ভারতবর্ষে মহা ধুমধামে মনসা দেবীর পূঁজার প্রচলন ঘটে। মহাকবি বিজয় গুপ্তের পিতার নাম সনাতন গুপ্ত ও মাতার নাম রুক্সিনী দেবী।

বর্তমানে মনসা মন্দিরটি ধর্মীয় উপাসনালয়ের পাশাপাশি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে। বরিশাল জেলা প্রশাসন জেলার দর্শনীয় স্থানের তালিকার শীর্ষে রেখেছে ঐতিহাসিক বিজয় গুপ্তের মনসা মন্দিরের নাম। দেশ-বিদেশের পুণ্যার্থী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের পর্যটনের উল্লে¬খযোগ্য স্থান হিসেবে রয়েছে এ মন্দিরের নিজস্ব স্বীকৃতি।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।