সোমবার , ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পবিত্র মহররম মাসে করণীয় ও বর্জনীয়

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
হিজরি বর্ষপঞ্জিকার প্রথম মাস মহররম। মহররম আরবি শব্দ। এর অর্থ অলঙ্ঘনীয় পবিত্র, সম্মানিত ইত্যাদি। পবিত্র কোরআনে এ মাসকে সম্মানিত মাস হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) মহররম মাসকে আল্লাহর মাস বলেছেন। ইসলামের ইতিহাসে বহু গৌরব-উজ্জ্বল ঘটনা এ মাসে সংঘঠিত হয়েছে। বিশেষ করে এ মাসের দশ তারিখ বা আশুরায় আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টিসহ বহু ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে।
মহররম মাসের রোজাকে সর্বোত্তম নফল রোজা বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পরে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রোজা হচ্ছে আল্লাহর মাস মহররমের রোজা।’ (সহিহ মুসলিম)  এ মাসের ১০ তারিখ আশুরার দিনের রোজার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হযরত আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিনের রোজা এ বছর এবং আগামী বছরের পাপের কাফফারা। আর আশুরার রোজা এক বছরের পাপের কাফফারা হবে।’ (মুসনাদে হুমাইদি ৪৩৩)
আশুরার দিনের রোজা এক সময় ফরজ ছিল। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর তা সুন্নত হয়ে গেছে। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘কুরাইশরা জাহেলি যুগে আশুরার দিন রোজা রাখত। অতঃপর যখন রমজানের রোজা ফরজ হয়, তখন তিনি বলেন, যার ইচ্ছা রোজা রাখবে, আর যার ইচ্ছা রোজা রাখবে না (সহিহ মুসলিম) ৷ ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখত। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) এ আমলকে ইহুদিদের থেকে আলাদা করার জন্য ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ বা ১১ তারিখেও রোজা পালন করতে উৎসাহ দিয়েছেন। অর্থাৎ আশুরার আগের দিন বা পরের দিন মোট দুটি রোজা রাখা সুন্নত।
কিন্তু আমাদের দেশে আশুরাকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির মধ্যে বেদআতি কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। ৬১ হিজরিতে ১০ই মহররম রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দৌহিত্র, জান্নাতের যুবকদের সর্দার হজরত হোসাইন (রা.) সপরিবারে কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেন। এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। আর এই কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণি মহররম মাসে অনেক বিদআতের প্রচলন করেছেন। মহররম মাস আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রথম দশদিন তারা নিরামিষ খাবার খায় এবং কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাজিয়া তৈরি করে। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) ঢাক, ঢোল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র বাজানোর ব্যাপারে কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন। তারপরও তারা মহররম মাসে ঢাক, ঢোল ও তবলা বাজিয়ে শোক পালন করে। এ ছাড়া আশুরার দিন হোসাইন (রা.)-এর কারবালার যুদ্ধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুক-পিঠ চাপড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে এবং ‘হায় হোসাইন, হায় হোসাইন’ মাতম করে। যার সঙ্গে ইসলামি শরিয়তের সামান্যতম সর্ম্পক নাই। মূলত হোসাইন (রা.)-এর বিরোধীরাই এসব বিদআত চালু করেছে। এসব বিদাআত মুসলিম উম্মাহর ইমানকে নষ্ট করে দিচ্ছে।
এ মাসে ঝগড়াঝাটি বা যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হতেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাস গণনায় বারোটি, তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস। এটি সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ নিষিদ্ধ মাসগুলোর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।’ (সুরা তওবা ৩৬)
তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ইসলাম বিরোধী এসব কাজ থেকে দূরে থাকা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত তরিকায় মহররম মাসে আমল করা। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত তরিকায় চলার তাওফিক দান করুন এবং  ইবাদতের নামে বেদআত থেকে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করুন। আমিন।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।