পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর দক্ষিণপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এক ভুয়া ডাক্তার সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্জারি বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেওয়া মো. রাশিদুল হাসান লাভলু (পিতা: মৃত আঃ জব্বার) তার নিজ বাড়িতে গোপনে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের অপারেশন পরিচালনা করে আসছিলেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে লাভলু পালিয়ে যান। পরে তার বাড়িতে একটি অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ ‘অপারেশন থিয়েটার’ থেকে অপারেশনের বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া যায় ।
ভুয়া চিকিৎসক লাভলু নিজেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিএমএইচ হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিলেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে ভয়াবহ অভিযোগের ছড়াছড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি গরিব, অসহায় ও অশিক্ষিত মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে স্ত্রীরোগ, বেস্ট টিউমার, জরায়ু ক্যান্সার, গ্যাস্ট্রিক-আলসার, মেরুদণ্ডের ব্যথা, জয়েন্ট ব্যথা, রগের ব্যথা, কোমর ব্যথাসহ বিভিন্ন জটিল রোগের ‘অপারেশন’ করতেন এবং মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন।
এক ভুক্তভোগী, গোপালনগরের মো. দুলাল প্রাং জানান, লাভলু তার পাইলসের অপারেশন করে দেন। অপারেশনের পর তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে পাবনা ও রাজশাহীতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে জানা যায়, মলদ্বারে টিউমার হয়েছে এবং শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু রয়েছে। তিনটি কেমোথেরাপি গ্রহণসহ চিকিৎসায় প্রায় ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয়, এতে তিনি অর্থনৈতিকভাবে সর্বশান্ত হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রিয়াংকা চক্রবর্তী বলেন, “এমন ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত তদন্ত করে ভুয়া ডাক্তার লাভলুকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।