মঙ্গলবার , ১৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - বর্ষাকাল || ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

গাছ থাকলেও গাছি মেলা ভার

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

খাগড়াছড়ির রামগড়ের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য খেঁজুর গাছ থাকলেও গাছি সংকট দেখা দিয়েছে।ফলে অধিকাংশ গাছই প্রস্তুত করা যাচ্ছেনা।প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে রস আহরণ। ফলে সেই শীতের ঐতিহ্য মিষ্টি খেজুরের রসের স্বাদ আজ ভুলতে বসেছে বর্তমান প্রজন্ম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও রামগড়ের বিভিন্ন এলাকায় খেজুরগাছে রসের হাঁড়ি ঝুলে থাকার দৃশ্য দেখা যেত। অথচ বর্তমানে শীতের এ মৌসুমে খেজুরের রস পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।রস প্রেমীরা দূর গ্রাম থেকে চড়া দামে রস সংগ্রহ করছে। তাও চাহিদার তুলনায় রস পাওয়া যায়না। মূলত গাছিসংকটের কারণেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গাছিদের পেশা পরিবর্তন, রস চুরি ইত্যাদি কারণে নতুন করে কেউ এ পেশায় না আসা সহ বেশ কিছু কারণে রামগড় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গাছি। আগে প্রতি গ্রামে ৪ থেকে ৫ জন করে গাছি ছিল, বর্তমানে কয়েকটি গ্রাম খুঁজেও গাছি পাওয়া যায় না।

সরেজমিন রামগড়ের মহামুনি, সোনাইপুল, সদুকার্বারীপাড়া , দারোগাপাড়া, ডেবারপাড়, গর্জনতলী, কালাডেবা, বল্টুরাম, খাগড়াবিল, নোয়াপাড়া, পাতাছড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- রাস্তার দুপাশ, খেলার মাঠ কিংবা বাড়ির আশপাশে অসংখ্য খেজুরগাছ পড়ে রয়েছে। পূর্বে শীতের আগেই রসের জন্য গাছগুলো প্রস্তুত করা হলেও বেশ কয়েক বছর অবহেলায় পড়ে আছে এসব গাছ।শীত শুরু হয়ে গেলেও এখনো খেজুরগাছগুলো রস সংগ্রহের উপযোগী করা হয়নি।

মহামুনি এলাকার বাসিন্দা বারেক আলী জানান, তাদের ২৫ থেকে ৩০টি খেজুরগাছ আছে। আগে এসব গাছ বর্গা দেওয়া হতো। কিন্তু বছর তিনেক ধরে গাছি না থাকায় গাছগুলো রসের জন্য প্রস্তুত করা হয়নি। অবহেলায় পড়ে রয়েছে গাছগুলো।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, গ্রামের মেঠো পথ বেয়ে খেজুরগাছের দীর্ঘ সারি এখন আর দেখা যায় না। শীতে গাছের নলির সঙ্গে বাঁধা রসের পাত্রে রস পড়ার দৃশ্য একেবারে বিলীন। গত বছর রস কেনার চেষ্টা করেও কোথাও পাওয়া যায়নি। এবার পাশের এলাকা থেকে কেজিপ্রতি ৮০-৯০ টাকা করে রস কিনতে হয়েছে। অথচ একসময় রামগড়েই ১০ থেকে ৩০ টাকা কেজিপ্রতি রস বিক্রি হতো।

আবদুর রাজ্জাক নামের এক গাছি জানান, গাছ কাটা খুবই কষ্টসাধ্য। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। গাছে ওঠা, গাছ চাঁছা এবং গাছে রসের পাত্র বসানোর জন্য অনেকবার ওঠা নামা করতে হয়। কিন্তু গাছের মালিকেরা ন্যায্য পারিশ্রমিক দিতে চায় না। তা ছাড়া রস থেকে গুড় উৎপাদনে যে খরচ হয়, তা কৃষকদের উঠছে না। এসব কারণে অনেক গাছি এখন অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছে।

মোস্তফা নামের আরেক গাছি জানান, খুব কষ্টের কাজ এটি। তরুণেরা কেউ এ পেশায় আসতে চায় না। যার কারণে গাছিসংকট দেখা দিয়েছে। তিনি আরও জানান, বেশির ভাগ সময় রস চুরি হয়ে যায়। পুরো বিকেল কষ্ট করে গাছ চেঁছে পাত্র লাগানোর পর সকালে উঠে দেখা যায় রস চুরি করে নিয়ে খালি পাত্র নিচে ফেলে রাখে। এসব দেখে আর গাছ কাটতে ইচ্ছে হয় না।

রামগড় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা রাশেদ চৌধুরী জানান, প্রশিক্ষিত গাছি একেবারে নেই।উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে জানানো হলেও কোন কর্মসূচি নেয়া হয়নি।তাছাড়া কষ্টের তুলনায় লাভ কম থাকায় এ পেশায় নতুন প্রজন্মের কেউ এগিয়ে আসছে না। আগের যারা এ পেশায় জড়িত ছিল কষ্টকর হওয়ায় বয়সের কারণে তারাও এ পেশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।