মঙ্গলবার , ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সাবেক মেজর সিনহাকে নিয়ে ওসি প্রদীপের অডিও কথোপকথন ফাঁস

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০

গুলিতে নিহত সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মরদেহের ময়নাতদন্তে চারটির বেশি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর আগে সুরতহাল প্রতিবেদনে মরদেহে ছয়টি গুলির চিহ্ন পায় পুলিশ।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেছেন, সেই রাতে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী চারটি গুলি ছোড়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ মৃত্যু নিশ্চিত করতে সিনহাকে আরও দুটি গুলি করেন।

মেজর সিনহার মৃতুর পর একজন পদস্থ ব্যক্তির সাথে কথা বলেন। যিনি ওসি প্রদীপকে এই হত্যাকাণ্ড থেকে পরিত্রাণের উপায় বাতলে দেন। ওসি প্রদীপের অডিও ক্লিপস ফাঁস হয়েছে।

ওসি প্রদীপ ও পরামর্শদাতার কথোকথন তুলে ধরা হলো

পরামর্শদাতা : হ্যালো।
ওসি প্রদীপ : স্যার, আদাব স্যার।
পরামর্শদাতা : হ্যা।
ওসি প্রদীপ : স্যার আমি ওসি টেকনাফ প্রদীপ, স্যার।
পরামর্শদাতা : হ্যা, কি খবর। প্রদীপ কোরবানির দিন গরুর মধ্যে তুমি কি!
ওসি প্রদীপ : স্যার, একটা মহাবিপদে পড়ছি, আপনার সাহায্য দরকার।
পরামর্শদাতা : বলো বলো।
ওসি প্রদীপ : এখন আমরা স্যার একটা ১৫৩, ১৮৬ ও ৩০৭-এ মামলা নিছি স্যার।
পরামর্শদাতা : ওয়ান ফিফটি থ্রি?
ওসি প্রদীপ : স্যার, থ্রি ফিফটি থ্রি।
পরামর্শদাতা : থ্রি ফিফটি থ্রি সরকারি কর্মচারীর কাজে বাধা, আরেকটা হচ্ছে…
ওসি প্রদীপ : আরেকটা হচ্ছে ১৮৬ পুলিশের কাজে বাধা।
পরামর্শদাতা : আর্মিদেরকে ইন্টিমেশন দিছ কিনা?
ওসি প্রদীপ : এরপরে দিসি স্যার আমরা। আর্মিরে জানাইসি। আর্মির লোকজন আসছে, সবাই আসছে।
পরামর্শদাতা : এ কি আর্মির নাকি?
ওসি প্রদীপ : অবসরপ্রাপ্ত স্যার ।
পরামর্শদাতা : ও তাইলে এত ডরের কি আছে?
ওসি প্রদীপ : এখন স্যার ও মারা গেছে, ইনজিওরড অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছে।
পরামর্শদাতা : এর সঙ্গে যে লোকটা ছিল ওইটা কি?
ওসি প্রদীপ : ওইটা স্যার একটা ছাত্র, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির। সে বলছে যে, আমরা রাতের বেলা পাহাড়ের সিন নেওয়ার জন্য… ওরা নাকি স্যার ইউটিউবের একটা চ্যানেল করার জন্য আসছে ভ্রমণের উপরে।
পরামর্শদাতা : তোমরা তো অবস্ট্রাকশন দিছ, অবস্ট্রাকশন ভায়োলেট কইরা গেছে, গাড়ি চালাইছে। গাড়িওয়ালারে এরেস্ট করছ কিনা?
ওসি প্রদীপ : স্যার, গাড়িচালক তো ও নিজেই।
পরামর্শদাতা : ও আচ্ছা আচ্ছা, গাড়ি জব্দ করছ কিনা?
ওসি প্রদীপ : জি স্যার করছি।
পরামর্শদাতা : আচ্ছা তোমরা যে বাধা দিছ, ওভারটেক কইরা গেছে, এইটার সাক্ষী আছে কিনা পাবলিক?
ওসি প্রদীপ : সাক্ষী আছে স্যার।
পরামর্শদাতা : সাক্ষী থাকলে মামলা কী নিছ বলো।
ওসি প্রদীপ : মামলা নিছি স্যার ১৮৬, ৩৫৩, ৩০৭।
পরামর্শদাতা : প্রেয়ার দিয়া দিবা যে, একটা মার্ডার হইয়া গেছে।
ওসি প্রদীপ : আর আলাদা কোন কেস দিতে হবে না স্যার?
পরামর্শদাতা : আরেকটা কেস কি নিবা?
ওসি প্রদীপ : আরেকটা কেস আমরা কী নেবো? ও যে সদর হাসপাতালে মারা গেছে স্যার। সদর হাসপাতালের বিষয়ে একটা ইউডি কেস নিয়ে নেবো স্যার?
পরামর্শদাতা : আমার তো মনে হয়, সদর থানারে দিয়া একটা ইউডি কেস করাই রাখ।
ওসি প্রদীপ : ভালো হবে, না স্যার?
পরামর্শদাতা : আমার মনে হয় ভালো হয়। আর্মির লোক তো পরে টানাটানি করে কিনা!
আর নাইলে তো…
ওসি প্রদীপ : নাহলে তো স্যার ওরা স্যার লাশ নিয়ে গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে যেকোনো সময়। আমরা একটা মামলা করে ফেললে ওই মামলাটা ট্যাগ করা যাবে।
পরামর্শদাতা : তাহলে তোমরা একটা কাজ করো না, ৩০৪-এও একটা মামলা নিয়া নিতে পারো।
ওসি প্রদীপ : ৩০৪-এ আমরা কি লিখবো স্যার?
পরামর্শদাতা : লেখবা যে, ইয়ার মধ্যে ইয়া হইছিল। আসামি হাউএভার মারা গেছে। এ কারণে মামলাটা রুজু করা হইল। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ওসি প্রদীপ : স্যার ৩০৭-এ এখানে আসামির কলামে কি লিখবো?
পরামর্শদাতা : না আরেকটা সেপারেট মামলার জন্য বলছি। যেহেতু আসামি মারা গেছে, তাই এ মৃত্যুর জন্য মামলা করা হলো।
ওসি প্রদীপ : স্যার মামলা নেবো যে, আসামির কলামে নাম লিখতে হবে না?
পরামর্শদাতা : পুলিশে গুলি করছিল, বুজছি তো। এই এজাহারটা পুরা লিখবা যে, এই এই কারণে তাকে অবস্ট্রাকশন করে আটকানো হইছিল। আটকানো হওয়ার পরে এই মামলা রজু হইছে। হাসপাতালে পাঠানোর পরে সেখানে সে মারা গেছে। যেহেতু মানুষ মারা গেছে, তাই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মামলা রজু করা হলো, ৩০৪-এ।
ওসি প্রদীপ : আসামি অজ্ঞাত।
পরামর্শদাতা : এইটা নিয়া রাখ। তাহলে এরা কোর্টে কেইস করলে এইটা ট্যাগ হইয়া যাবে।
ওসি প্রদীপ : স্যার, ৩০৪ আমি নেবো নাকি সেখানে ডিউটি অফিসার দিয়ে নিয়ে রাখব সদর থানা দিয়ে?
পরামর্শদাতা : সদর থানায় লইবো নাকি তোমার মামলা?
ওসি প্রদীপ : সবকিছু লেখার পরে লিখবো যে, সদর থানার মধ্যে মারা গেছে স্যার।
পরামর্শদাতা : হ্যা, হ্যা। তোমার এজাহারটা হুবহু লেইখা যাইবা যে, এই এই মামলার আসামি তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হইয়াছিল। যেহেতু আসামি মারা গেছে হাসপাতালে, সেহেতু সে মারা গেছে হত্যা মামলা রুজু করা হলো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই বর্ণনা হুবহু লিখবা।
ওসি প্রদীপ : সবকিছু লিখে লাস্টে এটা লিখবো।
পরামর্শদাতা : যেহেতু মারা গেছে এসব ঘটনার কারণে ৩০৪-এ হত্যা মামলা রজু করা হলো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ওসি প্রদীপ : ঠিক আছে স্যার, আসসালামু আলাইকুম।
পরামর্শদাতা : থ্যাংক ইউ।

উপদেষ্ঠা সম্পাদক মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল-০১৭১১-৪১৭৮৮০, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

২০২৪ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ