শুক্রবার , ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষকের আপনজন

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটে প্রাণ না হারাতেন কিংবা অন্য কোনো কারণে তার যদি মৃত্যু না হতো তবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তিনি শতায়ু হতেন। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার অর্ধশতবার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। এক অপূর্ব সেতুবন্ধন বঙ্গবন্ধু আর তার লালিত স্বপ্নের বাংলাদেশের মধ্যে। যদি এ মহানায়ক তার অতি প্রিয় বাংলার মাটিতে শতবর্ষ বেঁচে থাকতেন তবে এ দিনটি জাতি তখন কীভাবে পালন করত, তা ভাবলে মনেপ্রাণে শিহরণ জাগে। বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এ সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ প্রখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার প্রথম চিন্তা আমার দেশের জন্য। আমার যা কিছু দুঃখবোধ, সে তো আমার দেশের জন্যই। আপনি তো দেখেছেন, আমাকে তারা কত গভীরভাবে ভালোবাসে।’

 

এ অদম্য ভালোবাসাই বঙ্গবন্ধুকে মহান আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছিল আজীবন। সমগ্র বাঙালি তথা সারা বিশ্ববাসী সম্পর্কে তার এমন উপলব্ধিই বলে দেয় তার মহানুভবতা এবং ইতিহাস বলে এ কারণেই শত্রুরা তার পিছু নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষকের অতি প্রিয় একজন মানুষ, আপনজন। এ দেশের লাখ লাখ কৃষক পরিবারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের কাছে তিনি ছিলেন পিতৃতুল্য। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রথম সভায় নিলেন কৃষকের জন্য যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। তাদের সব বকেয়া খাজনা ও সুদ তিনি মওকুফ করে দিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা চিরতরে মওকুফ করার ঘোষণা দিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে এলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতির এ উজ্জ্বল উপস্থিতি সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার চিত্তকে এক অপার আনন্দের বন্যায় ভরিয়ে দিয়েছিল। ওইদিন সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দানকালে তিনি দেশের কৃষিব্যবস্থায় গতিময়তা আনা ও সংস্কারের লক্ষ্যে কৃষিবিদদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধির ঐতিহাসিক ঘোষণা প্রদান করেন। এর ফলস্বরূপ কৃষিবিদরা লাভ করেন সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা।

 

বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে কৃষক ও কৃষিবিদদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি চাউল খেতে হয় তাহলে আপনাদের চাউল পয়দা করে খেতে হবে, না হলে মুজিবুর রহমানকে বেটে খাওয়ালেও হবে না। সেদিকে আপনাদের নজর দিতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত এ ঐতিহাসিক পদক্ষেপের ফলেই দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদনসহ কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় সঞ্চারিত হয় ব্যাপক গতিশীলতা। এরই ফলস্বরূপ আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার সূচিত ভিশন ২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন, তারই অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেশ আজ সম্পূর্ণভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না। সত্য কখনও আড়াল করা যায় না। সত্য বারবার উদ্ভাসিত হয়, প্রস্ফুটিত হয়, উজ্জ্বল ধ্রুবতারার মতো আগামীর পথ প্রদর্শন করে। যারা সেদিন ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ইতিহাস থেকে, বাঙালির হৃদয় থেকে তার নাম মুছে ফেলবে, তাদের উদ্দেশে কবি শামসুর রাহমানের ভাষায় বলতে চাই- ‘ওরা তাকে হত্যা করে ভেবেছিল তিনি সহজে হবেন লুপ্ত ঊর্ণাজাল আর ধোঁয়াশায়, মাটি তাকে দেবে চাপা বিস্মৃতির জন্মান্ধ পাতালে; কিন্তু তিনি আজ সগৌরবে এসেছেন ফিরে দেশপ্রেমিকের দৃপ্ত উচ্চারণে, সাধারণ মানুষের প্রখর চৈতন্যে, শিল্পীর তুলিতে।

 

লেখক: মোঃ নাজমুল হুদা

সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রনেতা।

উপদেষ্ঠা সম্পাদক মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল-০১৭১১-৪১৭৮৮০, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

২০২৪ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ